নিউজ ডেস্ক : সূর্যমুখী অতিপরিচিত একটি ফুল। যা আমাদের সবারই চেনা। হলুদ রঙের এই ফুল দেখতে অনেক সুন্দর। সূর্যমুখীর বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়, যা মানে-গুণে অনন্য। মানবজমিন
সারাবিশ্বেই এই তেলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দেশেও বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয় ৬০ দশকে। বর্তমানে রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলাগুলোতে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।
সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এর ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ।
পুষ্টিবিদদের মতে, সূর্যমুখীর তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভালো এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি ও ই। নানা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সম্পূর্ণ সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অ্যাজমা ও বাতরোগ নিরাময় হয়: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে উন্নতমানের ভিটামিন-ই, যা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশের জ্বালাপোড়া কমায়। নিয়মিত এটি খেলে অস্টিওআর্থারাইটিস, অ্যাজমা ও বাতরোগ নিরাময় হয়।
হাড় শক্তিশালী করে: হাড়ের সুস্থতার জন্য ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম দুটোই খুব জরুরি। সূর্যমুখীর বীজ খনিজ পদার্থের খুব ভালো উৎস, তাই এটি সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক: এই বীজে আছে উচ্চমানের ফাইটোস্টেরল ও লিগন্যানস, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। এসব উপাদান শরীরে ক্যান্সারের কোষ তৈরি হতে দেয় না।
বয়সের ছাপ দূর করে: এতে আছে এন্টি-এজিং প্রপার্টিজ, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এর মধ্যকার ভিটামিন-ই ও বিটা ক্যারোটিন ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত করে ও ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখে। বিটা ক্যারোটিন ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে এবং ভিটামিন-ই ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না।
চুল পড়া রোধ করে: সূর্যমুখীর বীজে রয়েছে ভিটামিন বি-৬, যা মাথার স্কাল্পে অক্সিজেন সাপ্লাই করে চুলপড়া রোধ করে এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল নতুন চুল জন্মাতে সাহায্য করে। এতে আরও রয়েছে কপার, যা চুলের স্বাভাবিক রং ধরে রাখে।
ত্বক কোমল রাখে: সূর্যমুখীর বিচি ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস হওয়ায় ত্বকের এলাস্টিক ধরে রেখে ত্বককে মসৃণ ও কোমল রাখে।
দাগ দূর করে: সূর্যমুখীর বিচির মধ্যকার ফ্যাটি এসিড ত্বকে কোলাজেন ও এলাস্টিন তৈরি করে দাগ দূর করে। এতে আরও রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ, যা জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচায়।
কোলেস্টেরল কমায়: এই বীজে রয়েছে ফাইটোস্টেরল, যা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
স্নায়ুতন্ত্রকে ভালো রাখে: এর মধ্যকার ম্যাগনেসিয়াম নার্ভ সেলের অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমিয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করাতে সাহায্য করে।
মানসিক স্বাস্থ্য: সূর্যমুখীর বিচিতে রয়েছে ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার এমিনো এসিড, যা শরীরে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। সেরোটোনিন হচ্ছে এমন একটি উপাদান, যা ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা ও হতাশা দূর করে। অনুলিখন: জেবা আফরোজ
আপনার মতামত লিখুন :