সুজিৎ নন্দী: গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর ফ্লোরে তৈরি হচ্ছে মুজিব কর্ণার।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মময় জীবনের ওপর লেখা বই, মুজিব বর্ষ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য রাখা থাকবে। প্রধান প্রকৌশলীর কাছে সাক্ষাতকারীরা এ সুযোগ পাবেন।আর এরই মধ্যে পূর্তভবনে এলইডি সাইন তৈরি করা হয়েছে। বছরব্যাপী পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে গণপূর্ত অধিদফতরে ইমেজ সংকট তৈরি হয়েছে তা শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। নতুন দায়িত্ব নেওয়া প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিব বর্ষেই অধিদপ্তরের স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, গণপূর্ত টেকসই উন্নয়ন’ এই স্লোগান নিয়ে মুজিব বর্ষ পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে অধিদপ্তর।
সাম্প্রতিক শুদ্ধি অভিযানে গণপূর্ত অধিদফতর নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর প্রকৌশলীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় তাদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে শঙ্কিত মন্ত্রণালয়। কর্মকর্তারা মনে করেন, বালিশ কেলেঙ্কারি ও জিকে শামীমের কারণে সংস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী দায়িত্ব নিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে কাজ করে সংস্থার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ক্রয় ও দরপত্র জটিলতা নিরসন, অনুসন্ধান ও মূল্যায়ন, জনসংযোগ ও প্রচার, কার্যপরিধি নির্ধারক এবং প্রকল্প প্রণয়ন ও নকশা সংক্রান্ত পাঁচটি আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করে সিনিয়র প্রকৌশলীদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এতে সংস্থার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। মুজিব বর্ষে বছর জুড়ে নানা কর্মসূচি ও পদক্ষেপের মাধ্যমে সংস্থার ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
একাধিক সূত্র জানায়, আলোচিত ঠিকাদার জিকে শামীম গ্রেপ্তার হওয়ার পর শুরু হওয়া শুদ্ধি অভিযানে গণপূর্ত অধিদফতরের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর নাম আসায় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় আতঙ্কে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে গণপূর্তের কার্যক্রম। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, এলজিইডি বিভাগ, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার চেয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উন্নয়ন কার্যক্রম অনেক কম হওয়া সত্ত্বে ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে শুধু গণপূর্তের কয়েকজন প্রকৌশলীর নাম বারবার আসায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন গণপূর্তের সাবেক দু’জন প্রকৌশলীসহ বর্তমান কর্মরত তরুণ কয়েকজন প্রকৌশলীর নাম ক্যাসিনো কান্ডে নাম আসে। তবে এ নিয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে শুদ্ধি অভিযানে শুধু সিভিল প্রকৌশলীদের নাম এসেছে। তবে একাধিক সিভিল প্রকৌশলীরা জানান, জিকে শামিমের কাজ পাওয়ার প্রকৃত তদন্ত হলে বৈদ্যুতিক বিভাগের বেশ ক’জন প্রকৌশলীর নাম আসবে। যারা এখনো স্ব-স্থানে এবং স্বপদে বহাল আছেন।এরই মধ্যে অনেকে পদোন্নতি পেয়েছে।অনেকেই ঢাকার বাইরে পোষ্টিং নিয়েছে। এর পাশাপাশি প্রকৌশলীদের স্টাফ অফিসার, পিএস, বড়বাবুর নাম আসেনি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা তিনি প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধিদপ্তরের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই সোচ্চার। তবে কয়েকজনের দুর্নীতির কারণে গণপূর্তের ভাবমূর্তি ম্লান হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :