শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:৩৭ সকাল
আপডেট : ২৯ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:৩৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উচ্চশিক্ষায় প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি কী?

 

প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রধান চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা আর গবেষণার মান উন্নয়নে ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ করেছেন। কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন, যা ছিলো আধুনিক শিক্ষা সমাজের সবচেয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা কমিশন। বঙ্গবন্ধু উচ্চ শিক্ষা ধারণ করতেন বলেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠন করেছিলেন।

কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশকে আর সে পথে হাঁটতে দেখিনি। ১৯৭৫ সালের পর যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হোঁচট খায়। আর এতে করে শিক্ষা ব্যবস্থাতেও বড় ধাক্কা লাগে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষার মূলনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা চলে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় এসে এবং ধারাবাহিকতা থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়। উচ্চ শিক্ষার উন্নয়ন এবং বিস্তারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে নিরলস চেষ্টা তা সত্যিই ঈর্ষণীয় বলতে পারেন। গত এক দশকে উচ্চ শিক্ষার দিকে যদি তাকান দেখবেন, উচ্চ শিক্ষায় যে পরিবর্তন এসেছে, তা স্বাধীনতার পর আর হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে আমরা বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা এবং গবেষণার পথ প্রশস্ত করেছি। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশের যে রূপায়ণ ঘটছে, সেখানে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি। বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

২. এমন ঢালাও অভিযোগ মেনে নিতে পারছি না। মেনে নেওয়ার কোনো কারণও নেই। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান এবং আধুনিক শিক্ষায় যে পরিবর্তন এসেছে, তা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। কোনো কিছুতেই একদিনে শতভাগ সফলতা আসে না, আশা করা যায় না। সভ্যতার ইতিহাসও তা বলে না। আর শিক্ষার মান উন্নয়ন তো সেই ইতিহাসেরই ধারাবাহিকতার অংশ। শিক্ষকদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষাদান এবং গবেষণায় মন দেওয়া। উপাচার্যরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে যা করার, তাই করবে। সরকারের পক্ষ থেকে সব প্রকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা এখানে নিশ্চিত থাকতে পারিনি যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চায়, আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্বের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ করুক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চাইলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত বা হস্তক্ষেপ করতে পারে না। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার কারণেই নানা ক্ষেত্রে অসঙ্গতি তৈরি হয়। অন্য দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমাদের দায়িত্ব দেওয়া আছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা নেই।

আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্থ বরাদ্দ বা নিয়োগে যাচাই-বাছাই করার ক্ষমতা রাখি। কিন্তু অনিয়ম বা আইনবহির্ভূত কোনো কাজের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারি না। দায়িত্ব এবং কর্তৃত্বের মধ্যে সঙ্গতি রাখতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তা নেই বলে মনে করি। মূল দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের হাতে নেই। স্বাধীনতার এতো বছর পরও সক্ষমতা না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। ধরুন কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনিয়ম তদন্ত করলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। তদন্ত সাপেক্ষে পরামর্শ দিতে পারি আমরা। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমাদের পরামর্শ অনুসারে অনেক সময় ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

৩. পাশের দেশ ভারতেই মঞ্জুরী কমিশন স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা রাখে। অথচ আমরা রাখি না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি আজও। এরপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় একটি কাঠামোর মধ্যে আনার পরিকল্পনা চলছে। প্রায় ৩৯ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত। বিশাল এই পরিম-ল রাতারাতি আপনি এক কাতারে আনতে পারবেন না। সময় লাগবে। উচ্চ শিক্ষা একটি শৃঙ্খলায় আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। লেখক : শিক্ষাবিদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়