বিপ্লব রায়, শাল্লা প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের শাল্লায় পাউবো’র নীতিমালা অনুযায়ী কাজ না করে পিআইসির সদস্যরা গড়িমসি করে কাজ করে যাচ্ছে। নিজেদের ইচ্ছামতে কাজ করে হাওরের ফসলকে রাখছে হুমকির মুখে।
নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে বাঁধের ২০ ফুট দুর থেকে মাটি কাটতে হবে। কিন্ত এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে নিজেদের ফাঁয়দা হাসিলের জন্য পিআইসির লোকেরা বাঁধের গুড়া থেকেই মাটি কেটে বাঁধকে করছে ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে কাজ শুরু হওয়ার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কালিকোটা হাওরে অধিকাংশ ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ এখনো শুরু হয়নি। ফলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর থেকে গত ৫ ও ৯ ডিসেম্বর দু’দফায় নির্বাচিত পিআইসি সভাপতিদের কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলার কালিকোটা হাওর উপ-প্রকল্পের অনেক পিআইসি এখনো বাঁধের কাজ শুরুই করেনি।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) কালিকোটা হাওরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ৫৬, ৫৭ নং পিআইসি’তে এস্কেভেটর দ্বারা মাটি কাটা হচ্ছে। যদিও কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী ওইসব কাজ শ্রমিক দিয়ে বাস্তবায়ন করার কথা।
বাঁধের কাজগুলো শ্রমিকের পরিবর্তে এস্কেভেটর দ্বারা কাজ করায় একদিকে এলাকার হত-দরিদ্র শ্রমিকগণ কর্ম-সংস্থানের অভাব অনুভব করছে। অপরদিকে মেশিন দিয়ে বাঁধের গুড়া থেকে মাটি কাটায় বাঁধগুলো হচ্ছে তুলনামূলক ভাবে দুর্বল। ওই হাওরের ৫৮, ৫৯, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৫, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭০, ৭১, ৭৪, ৭৬, প্রকল্পগুলোতে এখনো কাজ শুরু হয়নি। তাছাড়া প্রকল্প এলাকায় দেখা যায়নি কোনো সাইনবোর্ডও।
যেসব প্রকল্পে এস্কেভেটর দ্বারা মাটি কাটা হচ্ছে সেগুলোতেও সাইনবোর্ড সাটানো হয়নি। ফলে এলাকার সাধারণ লোকজন প্রকল্প কাজের কোনোকিছুই জানতে পারছে না।
এদিকে ৭১, ৭৪ ও ৭৬ নং পিআইসি তিনটির লোকজনকে মাঠে ফেলে তারা জানান, আমরা এস্কেভেটর এনেছি। কিন্তু এস্কেভেটর সাইটে আনামাত্রই যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়ায় কিছুটা বিলম্বে হচ্ছে। তবে আজই আমাদের এস্কেভেটর সচল হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাহুতলা বাজার এলাকার কিছু সচেতন মহল এ প্রতিবেদককে জানান, আমাদের কালিকোটা হাওরে অনেকগুলো পিআইসিই অপ্রয়োজনীয়। তারা আরো বলেন, শুনেছি ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহ থেকে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করার কথা। যেসব পিআইসি’তে কাজ হচ্ছে সেগুলো কে কি ভাবে কাজ করছে, আজ পর্যন্ত কোনো তদরকি কর্মকর্তাকে বাঁধে দেখিনি। তদারকি না থাকায় পিআইসি’র লোকজন তাদের ইচ্ছা মাফিক বাঁধের গুড়া কেটে বাঁধ নির্মাণ করছে। আমরা তাদেরকে বার বার বাঁধা-নিষেধ করিলেও তারা আমাদের কথা শুনেনি। এছাড়া আমাদের রাহুতলা বাজার থেকে রাহুতলা গ্রাম পর্যন্ত যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেগুলোর কোনা প্রয়োজনই ছিল না। এটা সরকারি টাকা লোপাটের খন্ডচিত্র।
এব্যাপারে কথা বলতে শাল্লা উপজেলা শাখা কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সমসের আলী’র মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সুনামগঞ্জ পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন আগে উপজেলা সকল পিআইসি সদস্যদের নিয়ে বাঁধ বিষয়ে সতর্কতা মুলক মতবিনিময় করেছি। এবং বাঁধের ২০ ফুট দুর থেকে মাটি কাটার নির্দেশনা দিয়ে আসছি। এরপরও যদি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা : আলআমিন
আপনার মতামত লিখুন :