শিরোনাম
◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারী, ২০২০, ০৬:৪৭ সকাল
আপডেট : ২২ জানুয়ারী, ২০২০, ০৬:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জমি কিনুন সতর্ক হয়ে

নিউজ ডেস্ক : ঢাকার চারপাশে নদীর সীমানা পিলার স্থাপন নিয়ে জটিলতা ছিল। এর সমাধান হয়েছে। পিলার স্থাপনসহ নদী এলাকায় দখল ঠেকাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। ওয়াকওয়ে নির্মাণ, নদীতীর এলাকায় জমি কেনায় সতর্কতা জারিসহ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথ চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে সংস্থাটি। দৈনিক আমাদের সময়

ঢাকার নদীতীরে আবাসন কোম্পানির কাছ থেকে জমি, প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। নদীর জায়গা দখল করে তৈরি এসব ভবন উচ্ছেদে প্লট ও ফ্ল্যাটগ্রহীতার ক্ষতির কথা চিন্তা করে এ সতর্কতা জারি করা হয়।

এতে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অভিযানে ঢাকার বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও বালু নদী থেকে ১৭ হাজার ৯০১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় ৬৬৯ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। অপসারণ কাজ পরিচালনার সময় দেখা গেছে, বহু বেসরকারি হাউজিং সোসাইটি নদীর জায়গা দখল করে লিজগ্রহীতাদের প্রতারিত করে প্লট কিংবা ফ্ল্যাট বরাদ্দ করেছে। এসব স্থাপনা

অপসারণ করার ফলে সেসব প্লট/ফ্ল্যাটগ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই নদীতীরবর্তী এ ধরনের হাউজিং প্রতিষ্ঠান থেকে প্লট বা ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে প্রতারিত না হতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঢাকা, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের অধীনে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরীÑ এ ৫ নদী ঘিরে ১১৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মাজার, ঈদগাও, স্কুল ও কলেজ, স্নানঘাট, মন্দির, শ্মশানঘাট রয়েছে। এসব স্থাপনার কিছু অংশে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও পরিচালনা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের অবস্থানকে সম্মান রেখে তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধান চান সংশ্লিষ্টরা।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিন এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, নদীগর্ভে এবং নদীর তীরে থাকা স্থাপনার কারণে নৌপথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য সবার সঙ্গে মতবিনিময় করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে। অনেক দিন ধরে জিইয়ে রাখা সমস্যার সমাধানে আলেম সমাজসহ স্থানীয়দের সহায়তা চাওয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিএর একাধিক কর্মকর্তা জানান, নদী দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির রেওয়াজ পুরনো। এসব উচ্ছেদ করা হয়। কিছু স্থানে অভিযান চালানো কঠিন ধর্মীয় স্থাপনা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারণে। তাদের মধ্যে কেউ হয়তো নদী দখলের উচ্ছেদ কার্যক্রম ঠেকাতে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করে ফেলে।

ঢাকা নদীবন্দরের উচ্ছেদ অভিযান চলমান। ২০১০ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১৩ হাজার ৮১৬টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে এ সময়ের মধ্যে অভিযান চালিয়ে ৪ হাজার ২০৯টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদীর উচ্ছেদ করা তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে, জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলমান।

প্রকল্পের আওতায় ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় ৩ হাজার ৮০৩টি সীমানা পিলার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪২৭টি পিলারের পাইল, দৃশ্যমান পিলার ২০৭টি নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তা ছাড়া টঙ্গী নদীবন্দর এলাকায় ২০০৬টি সীমানা পিলার নির্মাণকাজের চুক্তি সই হয়েছে। আর নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের অধীনে ২৫০০ সীমানা পিলার স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া ঢাকার খাল রক্ষায় ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্ব নিতে চায় সংস্থাটি।

এদিকে বর্তমানে ঢাকার আশপাশে ৫ নদী ঘিরে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৭৭টি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার; পাঁচটি কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা; একটি ঈদগাহ; ১৪টি স্কুল ও কলেজ; ১৩টি স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট এবং তিনটি অন্যান্য স্থাপনা। ঢাকার নদীবন্দরের আওতায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৬৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭টি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মাজার, কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা ৪টি, ঈদগাও ১টি, স্কুল ও কলেজ ৬টি, স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট ৬টি। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

বুড়িগঙ্গার সূত্রাপুর, জিনজিরা, কেরানীগঞ্জ, চরঘুনাথপুর, মান্ডাইল, ব্রাহ্মণকিত্তা, কামরাঙ্গীরচর, নবাবচর, ঝাউচর, চরওয়াশপুর, কাউটাইল, হাসনাবাদ, আলীগঞ্জ, পানগাঁও, মিরেরবাগ, কোন্ডা, পাগলা, ধর্মগঞ্জ, কাউন্দিয়া, মিরপুর, জহুরাবাদ, তুরাগ, বিশিল, উত্তর কাউন্দিয়া, গোড়ান চটবাড়ি, বসিলা ও বিরুলিয়া মৌজায় এসব অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

এর মধ্যে তিনতলা, দোতলা, একতলা ভবন রয়েছে। টঙ্গী নদীবন্দরের অধীনে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে আবদুল্লাহপুর, আরিচপুর, দক্ষিণখান, উত্তরখান, মিরাশপাড়া, ডেলনা, ইছাপুরা, কায়েতপাড়া, পশ্চিমগাঁও, ডেমরা, চরচনপাড়া, তলনা, ডেলনা, কায়েতপাড়া, টঙ্গী ও পাগাড় মৌজায়। সেখানে ৩১টি স্থাপনার মধ্যে ১৯টি মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা, ৭টি স্কুল-কলেজ এবং ৫টি রয়েছে স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট।

আর নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের অধীনে ফিরিঙ্গিবাজার, পঞ্চসার, আটি, রূপসী, চাঁনপাড়া, শুকরসী, কুতুবপুর, মালিপাথর, রূপগঞ্জ, মুনজিল খোল, মুক্তারপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজায় ১৫টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এগুলো উচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলমান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়