ওবায়দুর রহমান সোহান, ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্যার এ এফ রহমান হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। স্যার এ এফ রহমান হলের ১ম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানায় ।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, স্যার এ এফ রহমান হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারী গ্রুপের সিনিয়ররা নিয়মিত গেস্টরুমে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলের ক্যান্টিনেও যেন না খায় সে নির্দেশ দেয়। নাম গোপন রাখা শর্তে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তারা যেন রিডিং রুমে না যায় এবং গেলে তাদেরকে গেস্টরুমে নিয়ে মারধর করা হবে হুমকি দিয়েছে ২য় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা। মূলত পড়াশোনা থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের রাজনীতি মুখী করাই এ নির্দেশনার প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানা গেছে।
গেস্টরুমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ২য় বর্ষের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের আরিফ, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অয়ন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হাসান, সমাজ কল্যাণ বিভাগের পলাশ, পালি ও বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ বিভাগের মাহবুব, সমাজ কল্যাণ বিভাগের জাবেদ, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তানভীর, পালি ও বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ বিভাগের আকিরের নাম পাওয়া গেছে। তবে, দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে তাদের কাছ থেকে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কোন নির্দেশনা আসেনা। তাদের সিনিয়ররা যা নির্দেশনা দেয় তা তারা বাস্তবায়ন করে মাত্র।
স্যার এ এফ রহমান হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী গ্রুপের দিক থেকে হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ প্রত্যাশীরা ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের এসব নির্দেশনা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সঞ্জিত চন্দ্র দাসের দিক থেকে হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা হলেন হলেন এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন ও সহ-সভাপতি হুসাইন মাহমুদ আপেল। তবে, ৩জন প্রদপ্রার্থী হলেও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রনির কথায় সঞ্জিত চন্দ্র দাসের অনুসারীরা চলে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, 'আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের রিডিং রুমে যেতে নিষেধ করেছেন। আমাদের হলের রিডিং রুমে আমরা পড়তে না পারলে পড়বো কোথায়? তাছাড়া, হলে ২য় বর্ষের ভাইয়েরা গেস্টরুমে অনেক চাপ দেয়। অনেক ভয়-ভীতি দেখায়। রাতের বেলা আমাদের সবাইকে হল থেকে বের করে দেয় এবং রাত ১/২ টার আগে হলে আসতে দেয়না। এতে আমাদের সকালের ক্লাস মিস হয়।'
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের বর্তমান হল কমিটির পদ প্রত্যাশী ও গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রনির সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ মেয়াদউত্তীর্ণ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্যার এ এফ রহমান হলের হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান এ বিষয়ে বলেন, তারা কেন আমাদের হল প্রশাসনের কাছে বলছে না এসব? আমরা হল প্রশাসন এই ধরণের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আপনার মতামত লিখুন :