শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারী, ২০২০, ১০:৪৭ দুপুর
আপডেট : ২১ জানুয়ারী, ২০২০, ১০:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিল্পাঞ্চল থানা হেফাজতে আবু বক্করের মৃত্যু, আছে ‘আঘাতের চিহ্ন’

ইনিকলাব : রাজধানীর শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ হেফাজতে নিহত আবু বক্কর সিদ্দিকী বাবুর (৪৫) গলায় কালো দাগ, মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এ সব তথ্য জানান। এছাড়া থানা হেফাজতে এফডিসির ফ্লোর ইনজার্চ আবু বকর সিদ্দিকীর মৃত্যুতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন তার সহকর্মীরা। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এফডিসির সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। নির্যাতন করে আবু বকরকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসির ফাঁসি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের অবরোধের কারণে কারওয়ানবাজার থেকে সাতরাস্তা, হাতিরঝিল ও মগবাজারে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে রাস্তা ছেড়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

অন্যদিকে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, গ্রেফতার হওয়া আসামীর থানা হেফাজতে আত্মহত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না। গতকাল সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশ হেফাজতে আসামী মৃত্যু একটি আত্মহত্যা। তবে এর দায় পুলিশ এড়াতে পারে না। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গাফলতির প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ময়নাতদন্ত করে লাশের গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার মাথায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এ আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হওয়ার মতন নয়। আমরা লাশ থেকে আলামত সংগ্রহ হিস্টোপ্যাথলজিতে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে রিপোর্ট এলে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না।

গত রোববার (১৯ জানুয়ারি) ভোরে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ অচেতন অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার স্ত্রী আলেয়া ফেরদৌসী অভিযোগ করে বলেন, বাবুকে পুলিশ মিথ্যা একটি মামলায় গ্রেফতার করে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হেফাজতে মৃত্যু নানা কারণে হতে পারে। নির্যাতনের অভিযোগ যেমন উঠে আসে, তেমনি অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুর উদাহরণও রয়েছে। হেফাজতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে কখনও কখনও। পুলিশি হেফাজতে যে কারণেই মৃত্যু ঘটুক না কেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা পুলিশ সদস্যদের কোনো গাফিলতি, বিচ্যুতি বা অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিক্ষোভের সময় আবু বকরের সহকর্মীরা জানান, আবু বকর ঢাকা সিটি নির্বাচনের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের চিঠি পেয়েছিলেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ফ্লোর ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন আবু বকর সিদ্দিকী। শনিবার সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ তাকে আটক করে। রোকসান আক্তার মায়া নামে এক নারী তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেখানেই পুলিশি নির্যাতনে রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন আবু বকর। এসময় তাকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) ইফতেখার ইসলাম অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আন্দোলনরত এফডিসির কর্মচারী ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজা বেগম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের কথা একটাই; কেন আবু বকরকে থানা হেফাজতে মরতে হলো? আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। তাকে (বকর) পুলিশ গ্রেপ্তার করছে শনিবার। কিন্তু যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে সেটা হয়েছে একদিন পর (রোববার)। তার মানে পুলিশ তাকে হত্যা করে নতুন নাটক সাজিয়েছে। থানায় কম্বল পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু তার গলায় একটা চিকন দাগ রয়েছে। তার মানে এটা পরিকল্পিত হত্যা।
ফিরোজা আরো বলেন, ঘটনার দিনও সে (বকর) ডিউটি শেষ করে আমাদের সঙ্গে দেখা করে বাসায় ফিরছিল। তারপরই শুনলাম সে মারা গেছে।

আন্দোলনরত জামাল শেখ নামে একজন বলেন, আমাদের সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করতে হলে অনুমতি লাগে। পুলিশ কেন তা নিল না? আর আমরা তো জানি থানার কাস্টডিতে ফাঁসি দেয়ার মতো কোনো অবস্থা থাকে না। এছাড়া সেখানে সিসিটিভি থাকার কথা। তারপরও কীভাবে সে গলায় ফাঁস নিলো? তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এক নারী বাদী হয়ে আবু বক্করের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তাকে গ্রেফতার করে হাজতে আনলে তিনি আত্মহত্যা করে। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়