নিউজ ডেস্ক: সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নারীরা আজ পুরুষের সহযোদ্ধা হয়ে সর্বত্র কাজ করছে। এরোপ্লেন, ট্রেন, ট্যাক্সি, মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। তেমনি আরেক বিরল ঘটনার দেখা মিলল, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। বাংলা নিউজ
রজুফা বেগম (৫৫) বাংলাদেশের প্রথম ডাল মিলের নারী হেডমিস্ত্রী। ২৫ বছর ধরে শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন ডাউল মিলে মেরামতের কাজ করে চলেছেন। ৮ বছর ধরে হেডমিস্ত্রী হিসেবে বানেশ্বরে অবস্থিত সুফিয়া ডালমিলের চারটি ইউনিটের মেরামতের কাজ তিনি একাই করেন।
মাত্র ১২ বছর বয়সে রজুফার বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র ৫ বছরের মাথায় মদ্যপ স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পারে ৫ বছরের ছেলে লাভলু এবং তিন বছরের মেয়ে সন্তান রোজিনা নিয়ে চলে আসে বাবার বাড়িতে। এসময় বানেশ্বরের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুস সোবাহান সরকার তাকে ডাল মিলে শ্রমিকের কাজ দেন। সেই থেকে শুরু।
ডালমিল মেরামতের কাজ করে তিনি ছেলে-মেয়ে বড় করেছেন, বিয়ে দিয়েছেন। পাঁচকাঠা জায়গা কিনে ছাদ ঢালাই পাকা বাড়ি করেছেন। বর্তমানে চারটি ডালমিলের মেরামতের সব দায়িত্ব পালন করেন। ডালমিল মালিকের মিল সংলগ্ন গরুর খামার দেখাশোনা করেন।
সুফিয়া ডাল মিলের ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম তাপস জানান, পুরুষ মিস্ত্রির চেয়ে ভালো কাজ করেন। ডাল মিলের ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ক্রটি রক্ষণাবেক্ষণ সহ ছোটখাটো মেরামতের কাজও করেন।
হেডমিস্ত্রী রজুফা বেগম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও আমি অভ্যাস্ত। ডাল মিলের সকল কাজ করি। আমার কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রায় ৩০ জন নারী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছে। এ কাজ করে প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা আয় করি।
মেয়েদের অংশগ্রহণ আস্তে আস্তে বাড়ছে বলে মনে করছেন রজুফা। এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় আনন্দের সঙ্গেই কাজ করেন। ডাল মিলের মিস্ত্রীর কাজে নারী সহজে কেউ মেনে নিতে পারে না। একজন নারী কীভাবে করবে? এমন প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। কিন্তু আমি কাজ করে প্রমাণ দিই।
বানেশ্বরের ডাল ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওবায়দুর রহমান বলেন, আমাদের পুঠিয়া উপজেলায় মোট ২৫০টি ডাল মিল আছে। এসব মিলের মধ্যে একমাত্র নারী হেডমিস্ত্রী রজুফা বেগম। তিনি পুরুষের তুলনায় মিল মেরামতের কাজ অনেক ভালো করতে পারেন। অনুলিখন: জেবা আফরোজ
আপনার মতামত লিখুন :