শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারী, ২০২০, ০৯:২৪ সকাল
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০২০, ০৯:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুমিল্লায় নতুন বছরের শুরুতে ৬ খুন, শঙ্কিত কুমিল্লাবাসী

মাহফুজ নান্টু কুমিল্লা প্রতিনধি : নতুন বছরটি কুমিল্লা জেলার জন্য আর্শিবাদ হবে। এমন আশা নিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জনানো কুমিল্লাবাসী এখন শঙ্কিত। নতুন বছরের গত ১৫ দিনে কুমিল্লায় আলোচিত ৫ টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর এসব হত্যাকাণ্ডের পরে আসামি আটক না হওয়ায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় প্রতিটি ঘটনা সংগঠিত হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর প্রতিটি খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলাও হয়েছে।

এদিকে পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য মাঠে কাজ করছেন সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম। তবে এসব খুনের ঘটনায় জড়িত ঘাতকরা এখনো রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, খুব শীঘ্রই এসব ঘটনায় জড়িত আসামি গ্রেপ্তার এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবেন তারা। তবে আশ্চর্যজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে আলোচিত এই ৫ টি খুনের ঘটনার মামলার আসামিরাই অজ্ঞাত।

সর্বশেষ, ১৫ জানুয়ারী বুধবার দিবাগত রাতের আধারে কুমিল্লার বরুড়ায় পল্লী বিদ্যুৎ এর কর্মকর্তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। নিহত শরীফ উদ্দিন খান সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের মধ্য ভদ্রঘাট এলাকার সাইফ উদ্দিন খানের ছেলে। তিনি পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ এর অধীন আড্ডা অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ ছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে জেলার বরুড়া উপজেলার খোশবাস উত্তর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের একটি টমেটো ক্ষেতের মধ্যে পাওয়া যায় আমেনা আক্তার (২৫) নামের এক যুবতীর মরদেহ। আমেনা ওই গ্রামের কৃষক মাজেদ মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় বুধবার তার পিতা মাজেদ মিয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ওই যুবতীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি এখনো।

পুলিশ, স্থানীয় সূত্র এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন বছরের প্রথম দিন (বুধবার, ১ জানুয়ারি) জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া ব্রিজের নিচ থেকে নগরীর বিষ্ণপুর (মুন্সেফ কোয়ার্টার) এলাকার ডা. লিয়াকত আলী ছেলে সাবাত হোসেনের (২৮) লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।উদ্ধারের সময় দেখা যায় লাশের হাতে কচটেপ পেচানো রয়েছে। সাবাত ঘটনার দুই দিন আগ থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায়

কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আনোয়ারুল হক প্রাথমিকভাবে ধারণা করে সে সময় জানান, সাবাতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর হাতে কচটেপ পেচিয়ে লাশ নদীতে ফেলা হয়ে থাকতে পারে। তবে এ ঘটনায় মামলা হলেও ঘাতকরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত ৯ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মোস্তফাপুর এলাকা থেকে মুরাদনগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য খায়রুল আলম সাধনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ। নিহতের শরীরের মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা তাকে অন্যত্র হত্যার পর এই স্থানে লাশ ফেলা হয়। তবে এই ঘটনায় মামলা হলেও খুনের রহস্য এখনো বের হয়নি।

এদিকে, নিখোঁজের ৬দিন পর গত ১১ জানুয়ারি শনিবার রাতে জেলার লালমাই উপজেলার বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকায় প্রবাসী জুয়েল রানার শিশুপুত্র আবু সুফিয়ান সানীর (৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও হত্যার কারন ও খুনিরা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।

অপরদিকে, গত ১৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নাওতলা থেকে নৈশপ্রহরী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. নাছির উদ্দিনের (২৬) ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যার রহস্য এবং খুনিদের বিষয়টিও এখনো অজানাই রয়ে গেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় এসব বিষয়ে জানতে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মো.নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো.আজিম উল আহসান বার্তা২৪.কমকে জানান, কুমিল্লা জেলায় অতীতের তুলনায় বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অনেক স্ট্রং। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য ব্যাপক কাজ করাসহ তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন পুলিশের সদস্যরা।

তিনি আরো জানান, আপনারা দেখেছেন যে প্রতিটি ঘটনা ঘটার পর পরই পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি ও পিবিআইও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং তারা এসব ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে। এছাড়া থানা পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি ঘটনার গভীরে তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রশিক্ষিত টিম।

মো.আজিম উল আহসান আরো বলেন, আমাদের জেলা পুলিশের কুমিল্ল উত্তর এবং দক্ষিণ এর জন্য দুইজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রয়েছেন। তারাও সার্বক্ষণিক এই বিষয়গুলি মনিটরিং করছেন। আর সম্প্রতিকালে যেই ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর বিষয়ে আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারব। সম্পাদনা : জেরনি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়