শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৯:১৫ সকাল
আপডেট : ১৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৯:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের পরিচয়ে চলছে নীরব চাঁদাবাজি

সময়ের আলো : ‘আমাদের একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ওর চিকিৎসার জন্য টাকা লাগবে। বেশি না, আপনি মাত্র ৩ লাখ টাকা দেবেন। আপনি যদি আমার কথা না শোনেন তাহলে আপনাকে সার্জারি করতে হয় এমন কাজ করব।’ ২ জানুয়ারি ০১৭৪২৯৭২৩০২ নম্বর থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ভয়ঙ্কর ‘মোস্ট ওয়ান্ডেট’ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন পরিচয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রফিককে ফোন করে এভাবেই চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়।

এমন আরও একাধিক ভুক্তভোগী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে শুধু সুব্রত বাইন নয়, পুলিশের লাল তালিকাভুক্ত (ওয়ান্টেড) শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়, মুন্নাসহ আরও কয়েকজন এবং স্থানীয় পর্যায়ে ভয়ঙ্কর কিছু সন্ত্রাসীর নামেও নীরব চাঁদাবাজি চলছে। তবে গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম পরিচয় ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজির চেষ্টার এসব ঘটনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতারক চক্রের সদস্যরা করছে। এসব বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দেন তারা। এর আগে এলিটফোর্স র‌্যাব ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজির অভিযোগে বেশকিছু প্রতারককে গ্রেফতারও করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মাসে বেসরকারি টেলিভিশনের একজন সাংবাদিককে সুব্রত বাইনের পরিচয় দিয়ে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ব্যাপারে তিনি থানায় অভিযোগও করেন। এর বাইরেও প্রতিদিনই কেউ না কেউ চাঁদার জন্য ফোনে হুমকির শিকার হচ্ছেন। তবে ফোনে চাঁদাবাজির হুমকির ক্ষেত্রে টার্গেট হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেছে নেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, শিক্ষক ও আইনজীবীদের। ভুক্তভোগীদের অনেকেই ভয়ে এ নিয়ে মুখও খোলেন না। ঝামেলা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অনেকেই যাচাই-বাছাই না করেই কথামতো টাকাও দিয়ে দিচ্ছেন বলে জানা যায়।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরেই ফোনে চাঁদার জন্য হুমকি ও মেসেজের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে, এ ধরনের অধিকাংশ ঘটনাই ঘটাচ্ছে বিভিন্ন প্রতারক চক্র। ওইসব ক্ষেত্রে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মশিউর রহমান বলেন, আগে একসময় জিনের বাদশা পরিচয়ে এক শ্রেণির প্রতারকরা মানুষকে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত।

জনগণ এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পর কথিত জিনের বাদশা পরিচয়ের প্রতারকরা এখন শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন প্রভাবশালীদের নাম পরিচয় ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি চালিয়ে যাচ্ছে। তারা যেসব ফোন নাম্বার ব্যবহার করছে তার বেশিরভাগই ভুয়া সিম। তারা বিদেশি নাম্বারের মতো করে বিশেষ নাম্বার তৈরি করে সহজ-সরল মানুষকে টার্গেট করে ফোনে চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়ে থাকে। অনেককে ফোন করার মাধ্যমে দুয়েকজন যদি ভয় পেয়ে টাকা দেন সেটিই তাদের অর্জন। এ লক্ষ্যেই তারা সিন্ডিকেট আকারেও কাজ করে থাকে। এসব প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে কাজ চলছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপর একজন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বা সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করে বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে চাঁদার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেল থেকেও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নির্দেশের বরাত দিয়ে চাঁদার জন্য হুমকি দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া এসব অপকর্ম চালাতে ভারতীয় বা অন্য দেশের সিম ‘রোমিং’ করে বাংলাদেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে করে বোঝা যায় যে সেটি বিদেশ থেকেই কল করা হচ্ছে। তবে এসব অপকর্মে প্রতারক সিন্ডিকেটই বেশি তৎপর। তাদের সেই সিন্ডিকেটে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন জড়িত বলেও জানা গেছে। যারা বিশেষ ধরনের ফোন নম্বর তৈরিসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার উপ-পরিচালক মেজর হুসাইন রইসুল আজম মনি সময়ের আলোকে বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারকরা বিভিন্ন জনকে ফোন করে চাঁদা দাবি করে হুমকি দেয়। র‌্যাব ইতঃপূর্বে এমন বেশ কয়েকজন প্রতারককে গ্রেফতারও করেছে। মূলত প্রতারক চক্রের সদস্যরাই সবচেয়ে বেশি এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে থাকে। তারপরও কেউ এমন হুমকির শিকার হলে তা র‌্যাব বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে পারেন। এসব বিষয়ে র‌্যাব সব সময়ই কাজ করে থাকে। এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।অনুলিখন : তন্নীমা আক্তার

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়