নিউজ ডেস্ক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসের গত এক বছরে বার্ষিক আয় কমেছে। তবে বেড়েছে সম্পদের পরিমাণ। জাগোনিউজ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাপসের জমা দেয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তার এ দুই হলফনামা জমা দেয়ার সময়ের ব্যবধান ১৩ মাস কয়েক দিন।
হলফনামা থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার বার্ষিক আয় ছিলো ১০ কোটি চার লাখ ৭৮ হাজার ৬২১ টাকা। সিটি নির্বাচনে তার বার্ষিক আয় ৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬ টাকা। অর্থাৎ ১৩ মাসে তার বার্ষিক আয় কমেছে ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৭৫ টাকা। তবে এই ১৩ মাসে তাপসের বার্ষিক আয় কমলেও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে এক কোটি ৬৪ লাখ ৬২ হাজার ৫৩৫ টাকা। তার স্থাবর সম্পদ স্থির রয়েছে, বেড়েছে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ। এই হিসাবের বাইরে রয়েছে তার বৈদেশিক মুদ্রা।
যেখানে কমেছে বাৎসরিক আয় : একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামা থেকে জানা যায়, তাপসের বাৎসরিক আয়ের মধ্যে কৃষিখাত থেকে ৩৫ হাজার, বাড়ি/দোকান/অ্যাপার্টমেন্ট/অন্যান্য ভাড়া থেকে ৪২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৮ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ২ হাজার ৩শ ২৩ টাকা, আইন পেশা থেকে এক কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকা, চাকরি থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা আসতো।
সিটি নির্বাচনের হলফনামা থেকে জানা যায়, গত এক বছরে তার কৃষিখাত, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান/অন্যান্য ভাড়া ও চাকরি থেকে আয়ের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৫ টাকা কমেছে। আইন পেশায় তার এক লাখ ১৯ হাজার ১০০ টাকা আয় বেড়েছে।
এক বছরে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ : একাদশ নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১০৫ কোটি ৫৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৩ টাকা। সিটি নির্বাচনে এসে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০৮ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৩ টাকা। অর্থাৎ এই সময়ে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৬০ টাকা।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তাপসের নগদ ৬ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৬০৯ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ৮ হাজার ডলার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৯ কোটি ৭৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯৫ টাকা, বন্ড/ঋণপত্র/স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার ৪৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৪ টাকা, পোস্টাল/সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৪৩ কোটি ২০ লাখ, ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৫ টাকা মূল্যের ৩টি গাড়ি, অর্জনকালীন ৭৫ লাখ টাকা মূলের অলঙ্কার, সাড়ে ৭ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রিক সামগ্রী, ১০ লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র ছিলো।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সিটি নির্বাচনের তুলনায় তাপসের নগদ অর্থ বেড়েছে ১৯ কোটি ৩০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৪৮ টাকা। তার মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা অর্থ ৮ কোটি ২৪ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৮ টাকা এবং পোস্টাল/সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত বিনিয়োগ ৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কমেছে। আর স্থির রয়েছে বন্ড/ঋণপত্র/স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার, ৩টি গাড়ি, সাড়ে ৭ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রিক সামগ্রী, ১০ লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র।
একেক জায়গায় একেক তথ্য : জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় ৩২ তোলা অলঙ্কারের অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করেছিলেন ৭৫ লাখ টাকা। তবে সিটি নির্বাচনে তিনি একই পরিমাণ অলঙ্কারের অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করেছেন এক কোটি টাকা।
তাপস জাতীয় নির্বাচনে দুই কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজার ৫২৫ টাকা অগ্রিম বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। সিটি নির্বাচনে নিয়েছেন চার কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা। অর্থাৎ এক কোটি ৬৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৫ টাকা বাড়তি ভাড়া নিয়েছেন তিনি।
উপরের হিসাবের বাইরেও তাপসের জাতীয় নির্বাচনে বৈদেশিক মুদ্রা ছিল আট হাজার মার্কিন ডলার। সিটি নির্বাচনে কমে হয়েছে তিন হাজার ৭৫০ ডলার। অর্থাৎ চার হাজার ২৫০ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা কমেছে তার।
আপনার মতামত লিখুন :