দৈনিক ইনকিলাব : আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় ২০১৩ সালে বাসে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত একাধিক নাশকতা মামলার আসামি কবীর হোসেন সরকার। এছাড়াও হত্যাচেষ্টা, জমি ও ঝুট ব্যবসা দখল এবং চাঁদাবাজিসহ প্রায় ডজন খানেক মামলারও আসামি কবীর। তবুও প্রায় দুই বছর ধরে আসীন রয়েছেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক হিসেবে। ঘটিয়েছেন নানা বিতর্কিত কান্ড, পদদলিত করেছেন দলীয় ভাবমর্যাদা।
আগামীতেও নাকি বিতর্কিত এই নেতা মামলার বোঝা মাথায় নিয়েই থানা যুবলীগের শীর্ষপদে নেতৃত্ব দেবেন এমন গুঞ্জন রটেছে। বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে তার প্রচারণামূলক ফেস্টুন ও যুবলীগ সেন্ট্রালেও চালাচ্ছেন জোড় লবিং। আবার তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল নিজেই মাদক সেবী। তার মাদক (ফেনসিডিল) সেবনের একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে এ সংবাদদাতার হাতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবীর হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে আশুলিয়া ও সীমান্তবর্তী জেলা গাজীপুরে রয়েছে নাশকতাসহ প্রায় ডজনখানেক মামলা। ২০১৩ সালে আশুলিয়ার নরসিংহপুরে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি নাশকতা মামলা দায়ের করা হয়। একই বছর তার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয় এই থানায়। এছাড়া ২০০৯ সালে একটি মামলা, ২০১০ সালে একটি মামলা ও ২০১৪ সালে বেশ কয়েকটি মামলা আশুলিয়া থানায় নথিভুক্ত রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আহ্বায়কের পদ পাওয়ার পর বিতর্কিত এই নেতার বিভিন্ন অপকর্মের স্বীকার ভুক্তভোগীরা গাজীপুরের কাশিমপুর ও আশুলিয়া থানায় পৃথক আরো চারটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালে হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগে আবিদ সরকার লিমন যুবলীগের এই নেতাকে প্রধান আসামি করে কাশিমপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৮ সালে স্থানীয় এমপি ডা. এনামুর রহমানের নির্বাচনী প্রচারণায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনায় কবীরের সরকারের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে আশুলিয়া থানায় দখল মামলা ও গাজীপুরে ২০১৭ সালে আরো একটি মামলা রয়েছে।
আশুলিয়া থানা যুবলীগের মাসুম মুন্সী ও আমিনুল ইসলাম খান বাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবীর হোসেন সরকারের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বড় ভাই শওকত হোসেন সরকার বর্তমানে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাহলে কবীর হোসেন সরকারের মত এমন একজন অনুপ্রবেশকারী কিভাবে আশুলিয়া থানা যুবলীগের কমিটিতে আহ্বায়কের পদে আসীন রয়েছেন তা বোধগম্য নয়। এমনকি আগামীতেও তিনি পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি পদ বাগিয়ে নেয়ার জন্য দৌড়ঝাপ করছেন। তাই আশুলিয়া থানা যুবলীগের কমিটিতে ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন আওয়ামী পরিবারের নেতাকর্মীদের নিয়ে আসার দাবি জানান তারা।
এছাড়া কবীর সরকারের ঘনিষ্ট সহযোগী আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল নিজেই মাদক সেবী। এমনকি মাদক ব্যবসার সাথেও সে জড়িত বলে খবর রয়েছে। এসব ব্যাপারে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবীর হোসেন সরকার বলেন, সবই মিথ্যা। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য মামলাগুলো হয়েছিল। তার কমিটির সদস্য নজরুলের মাদক সেবনের বিষয়ে বলেন, মাদক সেবনের ভিডিওটি ঠিক আছে কিন্তু চক্রান্ত করে তাকে খাওয়ানো হয়েছে। সে মাদক সেবী কিংবা মাদক ব্যবসায়ী নয়।
সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলা বলেন, সাভার ও আশুলিয়া যুবলীগে বিতর্কিত নেতা রয়েছে। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারাই নিয়ে থাকেন। অনুলিখন : তন্নীমা আক্তার
আপনার মতামত লিখুন :