শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:৩০ সকাল
আপডেট : ০৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিচারহীনতার সংস্কৃতি যে দেশকে কোথায় নিয়ে গেছে সেটা বোঝার অনেক পথ আছে, শুধু গত বছরে দেশে কতোজন নারী ধর্ষিতা হয়েছেন সেই হিসেব দেখুন

 

আলী রীয়াজ : বাংলাদেশ সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী একটি ওয়েবভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম জাগো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ‘আবরার হত্যাকা-ের মতো ঘটনা প্রতিদিন ইউরোপ-আমেরিকায় ঘটছে’। হ্যাঁ আপনি ঠিকই পড়েছেন তিনি বলেছেন, ‘আবরার হত্যাকা-ের মতো ঘটনা প্রতিদিন ইউরোপ-আমেরিকায় ঘটছে’। আমার জীবনের ছাব্বিশ বছর কেটেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে। শিক্ষার্থী থাকার সময়ে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয়েছে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় আকারের বিভাগের চেয়ারের দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয়েছে দশ বছর। ছাত্র এবং শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ এবং প্রকাশ করেছি। ১৯৯১ সালে হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকার সময়ে ইরাকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের বিরোধিতা করে সভা-সমাবেশের আয়োজন করার অভিজ্ঞতা আমার আছে।

এই ছাব্বিশ বছরেও জানতে পারিনি যে ‘আবরার হত্যাকা-ের মতো ঘটনা প্রতিদিন ইউরোপ-আমেরিকায় ঘটছে’। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীরা ছাত্রাবাসের ভিতরে তাদের তৈরি করা টর্চার সেলে আটকে রেখে হত্যা করেছে তার দেয়া একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে ওই পোস্টটিতে পরোক্ষভাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পাদিত চুক্তির বিরোধিতা করা হয়েছিলো।

সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশের জন্য ‘প্রতিদিন’ ‘ইউরোপ-আমেরিকা’র কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের অত্যাচার করে হত্যা করা হচ্ছে মিস্টার চৌধুরী নিশ্চয় জানেন তার উচিত হবে সেই তালিকা প্রকাশ করা। যুক্তরাষ্ট্রের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্ষমতাসীন দলের’ ছাত্র সমর্থকদের ‘টার্চার সেল’ আছে তা জানার কাজটি বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও করতে পারেন। আবরার হত্যার পর সারাদেশে গড়ে ওঠা প্রতিবাদের মুখে এই অভিযোগে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এই যে কথায় কথায় ‘আমেরিকায়ও হয়’ বলা সেটা কোনো কথার কথা নয়, এগুলো হচ্ছে এই ধরনের আচরণকে স্বাভাবিক বলে প্রতিপন্ন করা, এগুলো হচ্ছে এই ধরনের আচরণকে বৈধতা দেয়া এবং এই ধরনের কাজকে উৎসাহিত করা।

ছাত্রলীগের কর্মীরা যখন হত্যা, নিপীড়ন, হামলা করেন, ‘ছাত্রলীগের সমালোচনা করে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির’ অভিযোগে একজন শিক্ষকের উপরে তার দায়িত্ব পালনের সময়ে হামলা করেন সেগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। তারা জানেন যে তাদের এসব অপরাধী তৎপরতার বৈধতা দেয়ার লোকেরা আছেন দলের শীর্ষ পর্যায়েই। এগুলোর উৎস হচ্ছে জবাবদিহিহীন শাসন। ক্ষমতার ঔদ্ধত্যই অপরাধীদের পক্ষে দাঁড়ার সাহস যোগায়। বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রসার ঘটায়। সেই কারণেই এই ধরনের কথাবার্তাকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি যে দেশকে কোথায় নিয়ে গেছে সেটা বোঝার অনেক পথ আছে, শুধু গত বছরে দেশে কতোজন নারী ধর্ষিতা হয়েছেন সেই হিসেব দেখুন। কতোজনের বিচার হয়েছে? আজকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে সেই সময়ে সারাদেশে কতোজন নারী ধর্ষিতা হয়েছেন? দেশে আইনের শাসন থাকবে না, জবাবদিহি থাকবে না, ক্ষমতাসীনরা একধরনের দায়মুক্তি ভোগ করবেন, একজন প্রতিমন্ত্রী হত্যাকা-কে স্বাভাবিক ঘটনা বলে প্রতিপন্ন করবেনÑ সমস্যাটা কোথায় বুঝতে পারছেন? ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়