শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:১৫ সকাল
আপডেট : ০৮ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম এখন কেরানীগঞ্জে, আতঙ্কে স্থানীয়রা

দেশ রূপান্তর : পুরান ঢাকার অনেক কেমিক্যাল গুদাম এখন কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় স্থানান্তরিত হয়েছে। কেরানীগঞ্জের পূর্ব বন্দ ডাকপাড়া এলাকায় রাসায়নিক কেমিক্যালের গুদামে ভয়ানক বিস্ফোরণের পর স্থানীয়রা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি চক বাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৮০ জন নিরীহ মানুষ মারা যায়। কয়েকটি সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, চুড়িহাট্টায় যে পাঁচটি ভবন আগুনে পুড়ে যায় তার প্রতিটিতেই কেমিক্যালের গোডাউন ছিল। গুদামগুলোর রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের কারণেই আগুন এত ভয়ংকর রূপ ধারণ করে।

এ ঘটনার পর পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে অভিযানে নামে সিটি করপোরেশন। অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা বাঁচানোর লক্ষ্যে পুরান ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় কেরানীগঞ্জে গোপনে কারখানা স্থানান্তর করেন।

কেরানীগঞ্জের অনেক ভবন মালিক মোটা অঙ্কের অর্থের লোভে, অতিরিক্ত অগ্রিম ও ভাড়া পেয়ে কোন নিয়ম নীতি অথবা ঝুঁকির তোয়াক্কা না করেই আবাসিক এলাকার মধ্যেই তাদের জায়গা কেমিক্যালের গোডাউন হিসাবে ভাড়া দেয়। আর এর প্রতিফলন হারাবে গত রবিবার কেরানীগঞ্জের পূর্ব বন্দ ডাকপাড়া এলাকায় রাসায়নিক কেমিক্যালের গুদামে ভয়ানক বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরিত ওই গুদামের আশপাশের লোকজন জানান, দিনের বেলা কখনোই এ গুদামগুলো খোলা হতো না। রাতের আঁধারেই মাল আনা নেয়া করা হতো। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কেমিক্যালের গোডাউন গুলোতে রাতের আঁধারেই কাভার্ড ভ্যানের মাধ্যমে মাল আনা-নেয়া করা হয়, এ কারণেই এলাকাবাসী এ সমস্ত গোডাউন সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখে না।

সরেজমিনে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই কম বেশি কেমিক্যালের গোডাউন রয়েছে। কতগুলো গোডাউন রয়েছে তা নিয়ে ধারণা নেই এলাকাবাসীর, তবে অধিকাংশ গোডাউন গেল বছর চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পরেই স্থানান্তর করা হয়েছে বলে অনেকের অভিমত।

আতাশুর এলাকার বাসিন্দা হাবীব জানান, এই এলাকায় প্রায় ৫/৬ টির মতো কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে। এগুলো নিয়ে এলাকাবাসী চিন্তিত। ডাকপাড়ার বিস্ফোরণের পরে মনে ভয় ঢুকে গেছে। কখন কি হয় আল্লাহ মালুম। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

কালন্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. নুর উদ্দিন জানান, আমাদের ইউনিয়নেও বেশ কয়েকটি কেমিক্যালের গোডাউন আছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ দেশ রূপান্তরকে জানান, কেরানীগঞ্জে কি পরিমাণ গুদাম আছে তার সঠিক হিসাব জানা নেই। প্রতিটি গুদামই গোপনে গড়ে তোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, ভবন মালিকদের সঙ্গে আমরা কয়েক দফা আলোচনা সভা করেছি। আমরা পরিষ্কার ভাবেই বলতে চাই আবাসিক এলাকায় কোন গুদামঘর রাখতে দেয়া হবে না। পর পর দুটি ভয়ংকর দুর্ঘটনার পরে উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছে।

এ দিকে, পূর্ব বন্দ ডাক পাড়ায় কেমিক্যাল দুর্ঘটনার গুদামটির মালিক সম্পর্কে এখনো কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটির মালিক ও গুদামের মালিক মো. মারুফ হোসেন চিকিৎসার জন্য গত ১০ দিন যাবৎ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি এখানে খুব একটা আসেন না। এখানে তার একজন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া আছে। মূলত এই গোডাউনটি ম্যানেজারই দেখা শোনা করেন। ঘটনার পর থেকে ম্যানেজারও পলাতক রয়েছে।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম পিপিএম জানান, ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি মালিক মারুফ হোসেনের বাড়ি পুরান ঢাকায়।

উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল হাসান সোহেল জানান, কেমিক্যালের গুদামটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ছিল। গুদামের মালিক না থাকার কারণে তথ্য সংগ্রহ করতে বিলম্ব হচ্ছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লোকজনকে আমরা আসতে বলেছি। কি কারণে এত বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটল তা তাদের দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা তদন্তকাজ শেষ করতে পারব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়