শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:২২ সকাল
আপডেট : ০৭ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলা ডিবিতে হস্তান্তর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ডাকসু

মহসীন কবির ও ইসমাইল ঈমু : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ডাকসু নেতারা।সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে স্মারকলিপি দেন এজিএস সাদ্দাম হোসাইনের নেতৃত্বে ডাকসু নেতারা। তবে এ এসময় ডাকসু ভিপি, জিএস অনুপস্থিত ছিলেন।যমুনা টিভি ও চ্যানেল২৪

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই ধর্ষণের রহস্য উন্মোচন করা হবে উল্লেখ করে জানান, সারা বাংলাদেশে ক্রাইম এখন ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। তবে একেবারে কমে গেছে সে পর্যায়ে আসেনি। এর আগে ইভটিজিং নিয়ে সামাজিকভাবে আন্দোলন করে সফল হয়েছিলাম। এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ভালো সাড়া পেয়েছি। আমি মনে করি ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসাইন জানান, আমরা সুস্পষ্টভাবে ৪ দফা দাবি জানিয়েছি। ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির রোধে ব্যবস্থা, ‘কাউন্টার রেইপ এন্ড ভায়োলেন্স এগেইন্সট উইমেন সেল’ গঠন এবং ধর্ষণবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক কর্মসূচী গ্রহণের জন্য আমাদের দাবিগুলো পূরণের মধ্য দিয়েই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা পূরণ করতে চাই।

এর আগে ধর্ষণের ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় গতকাল মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ওই ছাত্রীর বাবা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সরব পুরো ক্যাম্পাস। বিচার দাবিতে রাজু ভাস্কর্য, অপরাজেয় বাংলা, শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নেতারা।

ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবন করা আছে। সেটা যেনো সর্ব্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়।নারীর জন্য নিরাপদ দেশের দাবিতে মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল করেছে ছাত্রদল। পরে অপরাজেয় বাংলায় সমাবেশ করেন তারা। এসময় দাবি জানান সুষ্ঠু বিচারের। পরে মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের মানববন্ধনের ভেতর দিয়ে গেলেও একই দাবিতে আন্দোলন হওয়ায় দু'পক্ষই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ধর্ষকের বিচারের দাবিতে এবং সামাজিক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আমাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচী। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্যের ডাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হন শাহবাগে। পরে মিছিল নিয়ে আসেন রাজু ভাস্কর্যে। এতে অংশ নেন ডাকসু ভিপি। তিনি জানান, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত চলবে প্রতিবাদ।

নুরুল হক নুর বলেন, তারা আইন-আদালত পুলিশ-প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে অনেক সময় অপরাধকে ধামা-চাপা দিতে চায়। সেকারণেই এ ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। টিএসসি ভিত্তিক মাইম অ্যাকশন সংগঠনের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাজিক আন্দোলন গড়ার নির্বাক প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, শুধু এই ঘটনা না, আমরা প্রতিটি ধর্ষনের বিচার চাই। এটা যেনো বন্ধ হয় সেজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। ধর্ষণ বন্ধে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনসহ চারদফা দাবি জানানো হয়। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে তারা যেনো এই ঘটনার ধ্রুত ও উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে অভিবাবকের মতো ভুমিকা পালন করে।

টিএসসি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিকক্ষার্থীরা, মহিলা পরিষদসহ অন্যান্য অনেক সংগঠন দাঁড়ান ধর্ষণ বিরোধী প্লাকার্ড হাতে। নারীর জন্য নিরাপদ নগরী দাবিতে করেন মানববন্ধন। বিমানবন্দ সড়কে যেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেখানে মানববন্ধন করেছেন, ওই রুটে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাসে যাতায়াতকারি শিক্ষার্থীরা। পরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন প্রতিবাদকারিরা। ধর্ষক যে বা যারাই হোক, শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ওই ছাত্রী বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কুর্মিটোলা বাসস্টেশনে নামার পর তাকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অনুসরণ করতে থাকে। মাঝপথে তাকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ঘটে। পরে রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে ওই ছাত্রীর। পরে তিনি রিকশায় করে বান্ধবীর বাসায় যান। সেখান থেকে বান্ধবীসহ অন্য সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়