শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:৪০ সকাল
আপডেট : ০৬ জানুয়ারী, ২০২০, ০৪:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অর্থনীতিতে ধনী ও ক্ষমতাশালীদের প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে

নিউজ ডেস্ক : বর্তমান সরকারের সময় দেশের যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, তা নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন থাকলেও বিশ্বব্যাপী উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছর সেই অর্থে অর্থনীতির বেশ কিছু সূচকের গতি ধীর হয়ে গেছে। সমকাল

রপ্তানি আয়ে ভালো খবর নেই। সরকার বড় বাজেট ঘোষণা করলেও রাজস্ব আদায়ে গতি নেই। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অর্থনীতিতে পুঁজি সরবরাহকারী প্রধান দুই উৎস ব্যাংক এবং শেয়ারবাজার খুবই খারাপ সময় কাটিয়েছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশে শুধু ব্যাংক বা শেয়ারবাজারই নয়, পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধনীদের দখলে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকার নিস্ক্রিয়।

রাজনৈতিক সরকার অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করতে পারছে না। ব্যাংক ও শেয়ারবাজারকে ঠিক করতে হলে ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ীদের প্রভাব থেকে এ দুটি খাত দূরে রাখতে হবে। বড় ধরনের সংস্কারে যেতে হবে।

বর্তমান সরকার তার তৃতীয় মেয়াদে একটি ক্ষেত্রে ভালো সাফল্য পেয়েছে এবং তা হলো প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স আয়। বলা যায়, এই রেমিট্যান্স আয় আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে। বাঁচিয়ে দিয়েছে এমন কথা বলার অর্থ হলো, এই আয় না পেলে দেশের লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি তৈরি হতো। রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে সফলতা, তার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ দিতে হবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স উদ্বুদ্ধ করতে নগদ ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

আরেকটি ভালো অর্জন হলো, জাতীয় আয়ে প্রবৃদ্ধি এ অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ছিলো। তবে এর বিপরীতে বৈষম্য, বিশেষত আয় ও সম্পদে বৈষম্য বেড়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অর্থনৈতিক দর্শন ছিলো বৈষম্য কমিয়ে আনা। বর্তমান সরকার এ ক্ষেত্রে সফলতা দেখাতে পারেনি।

ব্যাংক ও শেয়ারবাজার নিয়ে ভালো কিছু বলা খুবই মুশকিল। দায়িত্ব নিয়ে নতুন অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আর এক টাকাও বাড়বে না। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বছরজুড়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে বিশাল অঙ্কে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণ কমাতে অর্থমন্ত্রী একটা ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। তিনি খেলাপিদের উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এখন থেকে আর তাদের জেলে যেতে হবে না। এটি মারাত্মক বার্তা ছিলো। এর ফলে যারা ভালো ঋণগ্রহীতা ছিলেন, তারাও আস্তে আস্তে খেলাপি হয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ১১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯ লাখ কোটি টাকার বেশি ভালো ঋণ। বাকিটা মন্দ ঋণ। খেলাপি ঋণ কমাতে অর্থমন্ত্রীর ব্যবস্থা ভালো ঋণে ধস নামিয়েছে। যদি এ অবস্থা এ বছরও চলে, ব্যাংক খাতের জন্য তা সর্বনাশ ডেকে আনবে।

শেয়ারবাজার পুরো বছরই 'স্পন্দনহীন' ছিলো। এ বাজার নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা খুবই নিম্ন পর্যায়ে ছিলো। স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারল্য সংকটের কারণে এটি হয়েছে, কিছু টাকা-পয়সা দিলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা তো টাকা-পয়সার নয়। সমস্যাটা আস্থার, যা টাকা দিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। আস্থা ফেরাতে বড় ধরনের সংস্কার করা প্রয়োজন, যা সরকার তার প্রথম বছরে করেনি। আমরা আশা করি, সরকার এ বছর কিছু একটা করবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আমরা খুব বেশি আশাবাদী হতে পারি না। কারণ, ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজার কারসাজির পর সরকার তদন্ত কমিটি করে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যারা শেয়ারবাজার নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে এবং তাদের এ বাজার থেকে বের করে না দেয়া গেলে বা দূরে সরিয়ে না রাখতে পারলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা অসম্ভব বলে মনে করি। অনুলিখন : জহুরুল হক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়