শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:০৫ সকাল
আপডেট : ০৪ জানুয়ারী, ২০২০, ০৭:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আদর্শ : উৎপীড়নের নায্যতাদানকারী মন্ত্র!

মাসুদ রানা : আধুনিককালে মানবতার উৎপীড়নে শাসকদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে ‘আইডিওলজি’ বা আদর্শ। এই আদর্শ হতে পারে ইহুদিবাদ, ইসলামবাদ, হিন্দুত্ববাদ, বৌদ্ধত্ববাদ, খ্রিস্টত্ববাদ, মার্ক্সবাদ, ফ্যাসিবাদ, লেনিনবাদ, স্ট্যালিনবাদ, মাওবাদ কিংবা মুজিববাদ (অধুনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা)। মানুষের স্বাভাবিক সামাজিক জীবনের উপর রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে সম্ভাব্য যেকোনো প্রকারের বিরোধিতা দমন করে শাসকের শাসন নিরঙ্কুশ করার ‘যুক্তি’ ও ‘ন্যায্যতা’ সরবরাহকারী মন্ত্র হচ্ছে এই আদর্শ।

লক্ষ্য করবেন, এক আদর্শের অনুসারীরা অন্য আদর্শের পরিচালিত উৎপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও নিজদের কৃত উৎপীড়নের ব্যাপারে তারা নির্বিকার কিংবা কখনও কখনও সমর্থক। কেন? কারণ প্রতিটি আদর্শই এই শিক্ষা দেয় যে, এই আদর্শের বিরোধিতাকারীদের উৎপীড়ন করা ন্যায়সঙ্গত। কোনো না কোনো শত্রু চিহ্নিত করা এবং সেই শত্রুর দমনের আকাঙ্ক্ষা ছাড়া আদর্শ বাঁচতে পারে না। বাংলাদেশে ইসলামবাদীরা যখন ধর্মীয় সংখ্যালঘুর উপর নিপীড়ন করে, তখন কোনো ইসলামবাদীই তার বিরোধিতা করে না। তবে অন্য কোনো আদর্শবাদী শক্তি যখন ইসলামবাদীদের উপর নির্যাতন করে, তখন সেই আদর্শবাদীদের বিরুদ্ধে ইসলামবাদীরা অতি অবশ্যই সোচ্চার থাকে।

আজ যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে বিরুদ্ধপক্ষের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে তখন যে চেতনাধারীরা ধর্মবাদীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো, তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সংঘটিত নির্যাতন লক্ষ্য করে চুপ থেকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে জনগণের উপর নির্যাতন করার ক্ষমতা মার্ক্সবাদীদের নেই বলে তাদের আদর্শভিত্তিক নির্যাতনের বিষয়ে তাদের অবস্থান জনগণ বুঝতে পারে না। তবে তাদের আছে ‘সর্বহারা শ্রেণির একনায়কত্ব’ বলে একটি ‘ডক্ট্রিন’, যার ভিত্তিতে তারা প্রতিপক্ষের উপর অন্তহীন নির্যাতনকে ন্যায্য মনে করে। আর এই ডক্ট্রিনের ভিত্তিতেই তারা এই আদর্শের ভিন্নমতাবলম্বীদের বহিষ্কার থেকে শুরু করে কণ্ঠকর্তন পর্যন্ত করে।

অর্থাৎ যেখানেই আদর্শ বর্তমান, সেখানেই আদর্শের বেদীতে আদর্শের বিরোধিতাকারী বলে প্রত্যক্ষিত মানুষের মানবাধিকার বলি দৃশ্যমান। ফলে বুঝুন আদর্শ মানুষের স্বাভাবিক সামাজিক জীবনের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কী সাংঘাতিক মন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আপনি যেকোনো আদর্শবাদীকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, তারা ক্ষমতায় গেলে তাদের আদর্শের বিরোধিতাকারীকে সমান মতপ্রকাশের সুযোগ দিবে কিনা। দেখবেন তাদের সবাই প্রায় অভিন্ন উত্তর দেবেন। ইসলামবাদীরা ক্ষমতায় গেলে তারা বলবে, ইসলামী আদর্শের বিরুদ্ধে যায় এমন কিছুই তারা বরদাশত করবে না, মার্ক্সাবাদীরা বলবে, তারা ক্ষমতায় গিয়ে সর্বহারার আদর্শের বিরোধিতাকারী সংস্কৃতিও নির্মূল করবে; মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাদীদের কী জিজ্ঞেস করবেন, চোখের সামনেই তো দেখতে পাচ্ছেন। তাহলে বাংলাদেশে মানুষের মুক্তির পথ কী? চিন্তাশীল পাঠককে আমি ভাবতে বলবো। পরে আরও আলোচনা হবে। (এক বছর আগে নিচের লেখাটি লিখে ফেসবুকে প্রকাশ করেছিলাম, যা এখনও প্রাসঙ্গিক বলে পুনঃপ্রকাশ করলাম )। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়