ডেস্ক নিউজ : ঢাকা সিএমএম আদালতে বৃহস্পতিবার মোহাম্মাদপুর থানার মামলা নং-২(১)২০২০ নম্বর মামলার আসামি মো. নাদিম (৪৩) রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে বিচারকের কাছে এ অভিযোগ করেন।রাইজিংবিডি
মামলার বাদী র্যাব-২ এর জেসিও নায়েব সুবেদার আবু আক্কাস ওই মামলায় অভিযোগে করেন, “গত ১ জানুয়ারি বিশেষ অভিযানে ডিউটিকালে ৬ ঘটিকার দিকে সংবাদ পান যে, সীমান্ত এলাকা থেকে পিকআপে করে বড় ধরনের মাদক চালান গাবতলী হয়ে মোহাম্মাদপুরের যে কোনো স্থানে হস্তান্তর হবে।
সংবাদ পাওয়ার পর একটি পিকআপ ও একটি প্রাইভেটকার দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড়স্থ সুমাইয়া মার্কেটের নূর বিরিয়ানি হাউজের সামনে পাকা রাস্তার ওপর আটক করা হয়।
পিকআপে থাকা আসামি বেলালের কাছ থেকে ৮০ বোতল, সোহাগ সরদারের কাছ থেকে ৮৫ বোতল ও রাজু সরদারে কাছ থেকে ৮২ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়।
সেসময় প্রাইভেটকারে থাকা চার জনের মধ্যে আসামি তরিকুল ইসলামের কাছে থেকে ৯৭ বোতল ফেনসিডিলসহ নগদ এক লাখ ১০ হাজার টাকা, মো. নাদিমের কাছ থেকে ৯৬ বোতল, মো. সাইদুলের কাছে থেকে ৭৫ বোতল ও আসামি মাহবুবুল আলমের কাছে থেকে ৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার হয়।
ওই ঘটনায় ১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২০১৮ সালের মাদক আইনের ৩৬(১) এর ১৪(গ)/৩৮ ধারায় মামলা হয়।”
মামলাটিতে অভিযোগকারী রাজধানীর কোতয়ালী থানাধীন ৫২, জিন্দাবাজার প্রথম লেনের বাসিন্দা মৃত নাসির উল্লার ছেলে মো. নাদিম (৪৩)সহ সাত আসামিকে ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে মোহাম্মদপুর থানার এসআই প্রদীপ চন্দ্র সরকার বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করেন।
ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে রিমান্ড আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শুনানি হয়।
শুনানিকালে মো. নাদিমের আইনজীবী আবু হাসনাত ভূঁইয়া বাহাদুর অভিযোগ করেন, আসামি নাদিমকে গ্রেপ্তারের পর সিভিলে থাকা র্যাব সদস্যরা তার কাছে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি ডেবিটকার্ড নিয়ে নেন। পরে সেখান থেকে বেআইনিভাবে মোহাম্মাদপুর এলাকার যে কোনো বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়া হয়। বুথের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে কে টাকা তুলে নিয়েছে তা পাওয়া যাবে।
ওই সময় বিচারক আসামি নাদিমকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, তার ডাচ-বাংলা ব্যাংক ইসলামপুর শাখার হিসাব নম্বর- ১১৮১০১১৪১৬৮৬। র্যাব সদস্যরা সিভিল পোশাকে ছিলেন। এজন্য কে ডেবিটকার্ড নিয়েছে নাম জানতে পারেননি।
তিনি আরো জানান, তাকে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বছিলা থেকে র্যাব-২ এর কার্যালয়ে যাওয়ার সময় তাকে নিয়ে একজন র্যাব সদস্য একটি বুথে প্রবেশ করেন। তার কাছে ডেবিটকার্ডের পিন নম্বর জিজ্ঞাসা করলে তিনি ভুল পিন নম্বর দেয়ায় টাকা তুলতে পারেননি। পরে তাকে র্যাব কার্যালয়ে এনে মারধর করা হয়। সেসময় তিনি সঠিক পিন নম্বর দেন। পরদিন সকালে দুই দফায় এক লাখ টাকার মতো তুলে নেয়া হয়।
শুনানির পর বিচারক ওই বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানান। তবে আদেশে ডেবিটকার্ড নিয়ে টাকা তুলে নেয়ার কথা আইনজীবীর অভিযোগে লিখলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেননি বিচারক। রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই মর্মে রিমান্ড আবেদনও নামঞ্জুর করেন।
এ সম্পর্কে অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত ভূঁইয়া বাহাদুর বলেন, ‘সম্ভবত দুই দফায় র্যাব সদস্যরা টাকা তুলে নিয়েছেন। আদালত অভিযোগটি শুধু আদেশে লিখেছেন। এমন গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে আদালতের তদন্তের আদেশ দেয়া উচিত ছিল।’
মামলার এজাহার অনুযায়ী বাদী র্যাব-২ এর জেসিও নায়েব সুবেদার আবু আক্কাসের সঙ্গে ওই অভিযানের সময় র্যাব সদস্য এসআই মো খায়রুল হাসান, এএসআই মো. ফরহাদ আলী, নায়েক ফিরোজ হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল আরমানুল কবির, কন্সটেবল শহিদুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ ও সারোয়ার হাসান ছিলেন। সম্পাদনা: জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :