মুসবা তিন্নি : দেশজুড়ে যখন বই উৎসবের মেলা তখন বই পেলো না রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১ জানুয়ারি) বই না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেছে। অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারি এমন আচরণে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টায় বই বিতরণ শুরু হয়! তবে, যারা ১-১০ম স্থান অধিকার করেছে শুধুমাত্র তাদেরকেই স্কুল কর্তপক্ষের নির্দেশে বই দেয়া হয়। তার বাইরে আর কাউকেই বই দেয়া হয়নি! বাকিদের জানিয়ে দেয়া হয় ভর্তি হলে তবেই বই দেয়া হবে।
এরকম আরো অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে।
জানা যায়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজটি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ২০১৭ সালের অক্টোবরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্কুলটিকে সরকারি করার ঘোষণা করলেও এখনো এই স্কুলটিকে পুরোপুরি সরকারি করা হয়নি। এর সুবাদে স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে মোটা অংকের ভর্তি ফি’সহ প্রতি মাসে মাসিক বেতন হিসেবে অনেক বেশি পরিমাণে টাকা আদায় করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এমনকি, স্কুলের বার্ষিক বনভোজন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যে কারনে ভর্তির টাকার সঙ্গে বার্ষিক বনভোজনের টাকা কেটে নেয়া হয়। স্কুলটি মানসম্মত, এমন গুঞ্জন থাকায় অনেকের আর্থিক সমস্যা থাকা স্বত্বেও অনেক অভিভাবকরা নিজেদের সন্তানকে স্কুলটিতে পড়াতে আগ্রহী।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, স্কুলে আমাদের বাচ্চাদের ঠিকমতো পড়ানো হয় না। তার পরেও স্কৃুল কর্তৃপক্ষ সচেতন হচ্ছে না।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, তার ছেলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ওই শ্রেণির জন্য এবার ভর্তি ফি ধরা হয়েছে চার হাজার পাঁচশত টাকা। টাকা দিয়ে ২ জানুয়ারি থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি হয়ে বই নিতে বলা হয়েছে। এর আগে বই দেয়া হবে না বলে স্কুলটির অধ্যক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া, অভিভাবকদের সঙ্গে অধক্ষ্যর কঠিন ব্যবহারেরও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে স্কুলটির অধ্যক্ষ তায়েফুর রহমানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে পাওয়া যায়নি।
একটি সূত্রে জানা যায়, স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষক মেহের সরদার, যিনি স্কুলের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব পালন করে থাকেন এবং স্কুল পরিচালনার অনেক নির্দেশনা তার মতামতের ওপর ভিত্তি করে নেয়া হয়।
সূত্র মতে, তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের মেয়ে জামাই এবং অনেকে অভিযোগ করেন এই কারণেই তিনি এই সুযোগটা ব্যবহার করে থাকেন।
আপনার মতামত লিখুন :