গৌতম রায় : বিষয়টি গত বছর হঠাৎ করে খেয়াল করি। বন্ধু তালিকায় থাকা কয়েকজন পিতা-মাতা পিইসি বা জেএসসিতে তাদের সন্তানের জিপিএ-৫ পাওয়া নিয়ে যেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি, তেমনই না-পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেননি বা খেদ জানাননি। বরং উভয়পক্ষই তাদের সন্তানের বিকাশ, লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ ও শেখার প্রতি গুরুত্বকে সামনে এনেছেন।
অনেকে স্পষ্টভাবে এসব পরীক্ষার প্রতি তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি আমাকে এতোটাই অভিভূত করে যে, এ বছর সচেতনভাবে ফেসবুক টাইমলাইন খেয়াল করছিলাম এবং আরও অভিভূত হয়ে লক্ষ্য করলাম, এ রকম সচেতন পিতা-মাতার সংখ্যা বেড়েছে। এ থেকে অনুধাবন করা যায়, পিতা-মাতাদের পক্ষ থেকে অর্থহীন পিইসি বা জেএসসি পরীক্ষাকে অগ্রাহ্য করার হার বাড়ছে, বদলে বিকশিত হচ্ছে সন্তানের মানসিক বিকাশ ও সুষ্ঠু শিক্ষার প্রতি আগ্রহের ধারাটি। সন্দেহ নেই, এ রকম পিতা-মাতার সংখ্যা বাস্তবে আরও বেশি। আরও অনেকে হয়তো এভাবেই ভাবছেন, কিন্তু সেটির প্রকাশ হয়তো ফেসবুকে নেই।
পরীক্ষার আধিক্যের কারণে শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার্থী হিসেবে তৈরির বিষয়টি নিয়ে গত ক’বছর ধরে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু নীতিনির্ধারক মহল বিষয়টিকে আমলে নিচ্ছেন না, দুর্ভাগ্যজনকভাবে। সমাজ বা রাষ্ট্রে পরিবর্তন আনার অন্যতম একটি পদ্ধতি হচ্ছে প্রেসার গ্রুপের প্রেসার বাড়ানো। যেসব পিতা-মাতা এভাবে ভাবছেন, তাদের ভাবনার কারণে রাষ্ট্র একসময় এসব বিষয় নিয়ে আরও দ্রুতগতিতে ভাবতে বাধ্য হবে। সে কারণেই সচেতন পিতা-মাতাদের ভাবনাগুলোর প্রকাশ আরও বেশি বেশি হওয়া জরুরি, পিতা-মাতারা যদি তাদের এসব ভাবনা তাদের সহকর্মী কিংবা অন্য অভিভাবক কিংবা বিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত শেয়ার করেন, এই প্রেসার গতি পাবে। আমাদের ব্যবস্থা টপ-ডাউন অ্যাপ্রোচে অভ্যস্ত, বটম-আপ অ্যাপ্রোচ যতো দ্রুত বিকশিত হবে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য সেটি ততো দ্রুত মঙ্গল বয়ে আসবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :