ইত্তেফাক : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় বড়াল নদীর রেলসেতুর ঝুঁকিপূর্ণ লাইন দিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। ট্রেন চলাচলের সময় স্লিপার যেন না নড়ে সে জন্য লাইনে কাঠের গোঁজ ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর ওপর রেললাইনের পশ্চিম দিকে জয়েন্টের স্থান থেকে ছয় ইঞ্চি দূরে পাটাতন ভাঙা রয়েছে। সেখানে কাঠের বাতা দিয়ে স্লিপার আটকানো রয়েছে। এছাড়াও সেতুর ওপর একটি স্লিপারের দুই পাশে আটটি করে পিন দেওয়ার কথা থাকলেও রয়েছে কোনোটাতে দুটি, আবার কোনোটাতে তিনটি, আবার কোনোটাতে একটিও নেই। কোনো কোনো স্থানে নাট-বল্টু, ক্লিপ, হুক কিছুই নেই। দুই লাইনের গোড়ায় ফিসপ্লেটে চারটি নাট-বল্টু থাকার কথা। কিন্তু স্লিপারে তা নেই। স্লিপারগুলোও পুরাতন। বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কিছু পিন হাত দিয়ে বের করা যায়। লোহার পিনের জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে কিছু কাঠের গোঁজ, স্লিপারের লোহার মোটা পাতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে পাতলা প্লেন সিটের পাত, স্লিপার আটকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কাঠের বাতা। আরানী পৌর মেয়র মোক্তার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। এটা নিয়ে আগেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা দেখছেন না।
আড়ানীর ১৪ নম্বর রেলসেতুর ২৩৫ নম্বর থেকে কালাবিপাড়া ২৪১/০ নম্বর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রেল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা রাজশাহীর পি-ডব্লিউআই-এর ওয়েমেনের প্রধান ইয়াকুব আলী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ট্রেন ধীরে ধীরে পার করা হচ্ছে। সমস্যার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তবে ভাঙা স্থান মেরামতের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। রাজশাহীর পি-ডব্লিউআই ভবেশ চন্দ্র রাজবংশী বলেন, পিন বরাদ্দ না থাকায় ঝুঁকি এড়াতে কাঠের গোঁজ ও ট্রেন চলাচলের সময়ে স্লিপার যেন না নড়ে সে জন্য কাঠের বাতা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া আড়ানী সেতুর নষ্ট হয়ে যাওয়া স্লিপারের কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী পশ্চিম প্রধান প্রকৌশলী আলফাত মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর তাত্ক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। রেলসেতুগুলো অনেক পুরাতন হলেও এখনো অনেকটা ভালো আছে। তাই কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
আপনার মতামত লিখুন :