পীর হাবিবুর রহমান : গণমাধ্যমের বড় বড় হর্তাকর্তা, ক্ষমতাবানদের কাছে পরিচিত তথাকথিত বড় বড় সাংবাদিকরা, টকশোর অ্যাংকর থেকে আলোচক, সংবাদপত্রের কলামিস্টরা কতো জায়গায় দৌঁড়ঝাপ করেন! মানুষের ভাষা কি শুনতে পান? বিয়েশাদি সামাজিক অনুষ্ঠান, চেহলাম থেকে মেজবানে দৌঁড়ান। নেতানেত্রীর আঙ্গিনায় জড়ো হন, কতো মানুষের দেখা পান, তাদের কথা কি শুনেন কখনো? জানার চেষ্টা করেন মানুষ কাদের লেখা পছন্দ করে? টকশোতে কাদের কথা শুনতে আগ্রহী? কেন পছন্দ? কাদের তালি দেয়, কাদের গালি দেয়, কাদের আমলেই নেয় না? সুনামগঞ্জ ও সিলেটে দুটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সমাজের অগ্রসর প্রতিনিধিত্বশীল নানামত ও পথের মানুষের সঙ্গে দেখা। সুনামগঞ্জে আড্ডাই দিয়েছি, এতো কথায় যাইনি।
কিন্তু সিলেটে ডা. জেসমিন ও ডা. সাখাওয়াত দম্পতির ছেলের বিয়েতে দেশের বিভিন্ন জায়গার অনেক চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা। দেখা বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে। তাদের বেশির ভাগের সঙ্গে আগে কখনো দেখা হয়নি। আমার লেখা ও টকশোর সঙ্গে তাদের নিবির সম্পর্ক। গভীর মনোযোগে পাঠ করেন, শুনেন। বেশির ভাগই সরকার সমর্থক। বললেন, লিখতে হবে, বলতে হবে। আমি কেবল ভাবছি, আসলে কি লিখতে পারি? বলতে পারি? দলকানা, দলদাস, দাসীদের আস্ফালনের এ সমাজে। তারা আর কার টকশো শুনেন, কার কার লেখা পড়েন, তাও বললেন।
আমার কেবল মনে হচ্ছিলো, আচ্ছা জবাবদিহিতার জায়গায় গণমাধ্যম কি জানে, টাকা দিয়ে কাগজ কেনা পাঠক কতোটা সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে পড়েন? টিভি নিউজ টকশো দেখেন, শুনেন? সেখানে কি অগণিত মানুষের, মানে সমষ্টির কথা উঠে আসে? মানুষের ভাষা কি শুনতে পান প্রতিষ্ঠানকে সময় না দিয়ে নানা জায়গায় দৌঁড়ঝাপ করা গণমাধ্যমের তথাকথিতরা? আমার আরও মনে আসছিলো এই যে সরকারি আমলাদের হাতে এতো ক্ষমতা, চাপরাশি। এই যে মন্ত্রী-এমপি, তাদের পেছনে কতো চাটুকার, সুবিধাবাদী ও মানুষ, তারা তো প্রান্তিকে নিয়মিত যান, মানুষের মনের গণগনে আগুনের কড়াইয়ে যে ভাষা ফুটছে, তা কি শুনতে পান? বিরোধীদলসহ সব দলের নেতারা কি বুঝেন মানুষের ভাষা? নতুন প্রজন্মের কেন তাদের প্রতি অনিহা? আমার কেবল আয়নায় নিজের মুখটি ভাসে, যা বলতে চেয়েছি, যা লিখতে চেয়েছি, সত্যি কি তা পেরেছি? আমি জানি আমি পারিনি, তবে পারবার জন্য নিয়ত লড়ছি, আর দাসত্বের শৃঙ্খলে বাধিনি নিজেকে অন্তত সুযোগ সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :