লীনা পারভীন : প্রথম আলো একটা জরিপ করেছে, যার ফলাফল হচ্ছে এদেশের তরুণেরা ধর্মের দিকে ঝুঁকছে, তবে কমছে ধর্মান্ধতা। রিপোর্ট বা গবেষণার ফলাফল পড়ে বুঝি নাই এই জরিপে কতোজন অংশগ্রহণ করেছিলো। মুসলিমের পার্সেন্টেজ বেশি, হিন্দু হাতেগোনা। তবে ১০ জনের একটা হিসাব আছে, যেখানে সবাই মুসলিম তরুণ এবং তারা তাদের মতামত দিয়েছে। ১০ জন দিয়ে গবেষণা করা যায়? অন্য ধর্মে কি এইগুলো নেই? অন্ধতা নেই? হেডলাইন ও ভেতরের বিস্তারিত দুটোর মধ্যে বিস্তর ফারাক। ইন্টারেস্টিং ইস্যু হলো প্রথম আলোর এই গবেষণাগুলো আসলে কারা করে, কেন করে তার আগামাথা পাওয়া যায় না।
এর আগেও তারা মহাখালী রেললাইন অধিভুক্ত এলাকায় গবেষণা চালিয়ে জানান দিয়েছিলো দেশে তরুণদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে বেকারত্বের কারণে। চমৎকার না? স্যাম্পলিং পদ্ধতিতেও যদি কেউ গবেষণা চালায় তাহলে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৩৫ শতাংশ তরুণের মধ্যে কতো পার্সেন্ট বা কতোজনকে আপনি জরিপের অংশগ্রহণকারী করছেন বা করলেন তার একটা সঠিক বৈজ্ঞানিক মাপকাঠি আছে যা তাদের উল্লেখিত পত্রে পাওয়া যায় না। বাস্তবে এটা ঠিক যে দেশের তরুণ সমাজের একটা অংশ ধর্মকে জানতে চায়, ধারণ করতে চাইতেই পারে। এতে দোষের কিছু নাই। সব সময়েই ছিলো আছে ও থাকবে।
কিন্তু কতোজনের মধ্যে কতোজন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আর কতোজন এক ওয়াক্ত পড়ে আর কতোজন কেবল জুম্মা পড়ে বা রোজার সময়ে রোজা রাখে বা তারাবী পড়ে এ দিয়ে যদি সরল সমীকরণ টেনে দেন তাহলে তো বিপদ। গবেষণার উদ্দেশ্য আসলে কী হওয়া উচিত? এর থেকে যদি ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো দিকনির্দেশনাই না পাওয়া যায়, যার ভিত্তিতে নীতিনির্ধারণী স্তরে কাজ করার রাস্তা তৈরি হবে তাহলে সে গবেষণার রেজাল্ট কাকে কী দেখাবে? নামাজ পড়াই কী ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়া? ধর্মের আর কোন দিক নেই? ধর্ম কোনো খারাপ সাবজেক্ট নয় বরং ধর্মকে জেনে সঠিক বেঠিক জানার দৃষ্টি তৈরি হয়। এটা সমাজে কখনই খারাপ করে না। উগ্রবাদকে উস্কে দেয় না। একদিকে তারা বলছে দেশে ধর্মান্ধতা বাড়ছে না মানে উগ্রবাদের দিকে যাচ্ছে না আবার বলছে কেউ কয় ওয়াক্ত নামাজ পড়ে সেটাই নাকি নির্ধারণ করছে কয়জন ধর্মের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। রিপোর্ট পড়ে আমি দিশেহারা অবস্থায় আছি। উদ্দেশ্য পরিষ্কার না থাকলে ভালো উদ্যোগও মাইর খেয়ে যায়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :