নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারের উপর জোর চাপ দিচ্ছে চীন। ফলে প্রতিবেশী বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব দুর্বল হয়ে আসছে। সাউথ এশিয়ান মনিটর
বাংলাদেশে ভারতের প্রভাবের উপর এর আগেই একটা বড় আঘাত আসে, যখন ভারতের পার্লামেন্ট এনআরসি-সিএবি নিয়ে বিতর্কের সময় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিবেচনাহীনভাবে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানকে একই পর্যায়ে নামিয়ে আনেন। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারেও মিয়ানমারকে কোন ধরণের চাপ দিতে ব্যার্থ হয়েছে ভারত। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এখন বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের মিনিস্টার (কাউন্সিলর) এবং ডেপুটি প্রধান ইয়ান হুয়ালং এক বৈঠকের পর মিডিয়াকে জানান, “রাষ্ট্রদূত লি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমের সাথে বৈঠক করেছেন এবং বাস্তুহারা মানুষদের (রোহিঙ্গা) দ্রুত তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন”।
এদিকে, রাষ্ট্রদূত লি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার এবং ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. হাবিবে মিল্লাতের সাথে বৃহস্পতিবার দেখা করেছেন।
উভয় পক্ষ বাংলাদেশ আর চীনের মধ্যে মানবিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের দেশে ফেরানোর বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন তারা।
একজন কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ যদিও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে আছে, কিন্তু মিয়ানমার অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং মিথ্যা দাবি করছে যে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর একটি দিক হলো ত্রিপক্ষীয় যৌথ ওয়ার্কিং মেকানিজম প্রতিষ্ঠা করা, যেটা সরাসরি নেতৃত্ব দিবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার ইউংয়ের ডিজি। ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, ত্রিপক্ষীয় যৌথ ওয়ার্কিং মেকানিজমের উদ্দেশ্য হলো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে টেকনিক্যাল ও আভিযানিক সমস্যাগুলো ‘খোলামেলা ও ঘন ঘন আলোচনার মাধ্যমে’ দূর করা।
তারা বলেছে, যৌথ ওয়ার্কিং মেকানিজমের প্রথম বৈঠকে সফলভাবে একটি অভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ১.১ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং এদের অধিকাংশই কক্সবাজারে প্রবেশ করে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে, যে সময় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ষাঁড়াশি অভিযান চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। চীন কার্যকরভাবে মিয়ানমারের উপর তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে সাহায্য করছে, যেটার কারণে হাসিনা সরকারের উপর তাদের প্রভাব আরও বাড়বে।
হাসিনা সরকার ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়া সত্বেও এনআরসি-সিএএ প্রক্রিয়া নিয়ে হতাশা জানিয়েছে এবং সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর এবং যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক বাতিল করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :