শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৮:৪২ সকাল
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৮:৪২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাদই পড়ছেন খোকন

আমাদের সময় : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (ডিএসসিসি) মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও একটি অসমর্থিত সূত্র এমনটাই দাবি করেছে। গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলটির স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হলেও অবশ্য দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।

দক্ষিণের নির্বাচনে নৌকার মাঝি কে হবেন তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জল্পনা-কল্পনা চলছে। তাপস হঠাৎ করে দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনার পর থেকে এ আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাপস চূড়ান্ত হলে দলটির হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ হারাবেন বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন। গত কয়েকদিন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলে আসছেন, নির্বাচনে বিতর্কিত কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। অনেকে মনে করছেন, দায়িত্ব পালনকালে সাঈদ খোকনকে নিয়ে নানা বিতর্ক ওঠায় আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনে প্রার্থী বদলের চিন্তা করছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেলায়ও সাম্প্রতিক সময়ে ওঠা ক্যাসিনোকা-ে সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র আতিকুল ইসলামই ফের দলের টিকিট পাচ্ছেন বলে গতকাল নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গতকাল সন্ধ্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আজ রবিবার বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকার দুই সিটিতে দলটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। তিনি আরও বলেন, প্রার্থীদের বিষয়ে এখনো খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণে ক্ষমতাসীন দলটির মেয়রপ্রার্থী কে হচ্ছেন এ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছিল নানা আলোচনা ও গুঞ্জন। আজ প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার মাধ্যমে এসবের অবসান ঘটবে। গত সাড়ে চার বছর ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সাঈদ খোকনের নাম নানা আলোচনা-সমালোচনায় উঠে আসে। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর তার বেফাঁস মন্তব্যে নগরবাসীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ছাড়া দলের হাইকমান্ডেও তার কর্মকান্ডে অসন্তোষ ছিল। নীতিনির্ধারক পর্যায়ও তাই প্রার্থী পরিবর্তনের পক্ষে ছিল সরব। সব মিলিয়ে দক্ষিণে নৌকার নতুন মাঝি হিসেবে দল আস্থা রাখতে যাচ্ছে ব্যারিস্টার তাপসের ওপর।

ঢাকা দক্ষিণে সাড়ে চার বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী সাঈদ খোকনের ওপর আওয়ামী লীগ আস্থা রাখতে না পারলেও ঢাকা উত্তরে মাত্র ৯ মাস মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী আতিকুল ইসলামেই ফের আস্থা রাখতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তিনিই মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন বলে গতকাল নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।

শুধু রাষ্ট্রেই নয়, ক্ষমতাসীন দলটির ভেতরেও এখন চলছে শুদ্ধি অভিযান। চলমান এ অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে সম্প্রত বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে অঙ্গসহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোয় বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িতরা নেতৃত্ব হারান।

ঢাকা দুই সিটিতে বিভক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে আসীন হন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের এক সময়ের জনপ্রিয় মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকন। এর পর পেরিয়ে গেছে সাড়ে চার বছর। এ সময়কালে দক্ষিণের মেয়র প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিস্তর, বাস্তবায়ন হয়নি এগুলোর ন্যূনতমও।

জানা যায়, সাঈদ খোকনের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরও। গুটিকয় ছাড়া দক্ষিণের অধিকাংশ কাউন্সিলরই তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দলের হাইকমান্ডেও রয়েছে তাকে নিয়ে অসন্তোষ। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সাঈদ খোকন যদি মেয়রপ্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন না পান, তবে তা হবে তার নিজের কৃতকর্মেরই মাশুল।

এদিকে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা দক্ষিণে নৌকার নতুন মাঝি হতে যাচ্ছেন এমন সংবাদে গতকাল রাতেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী। গণভবনে গতকাল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা চলাকালে বাইরে তাপসের পক্ষে স্লোগান শোনা গেছে বেশ কয়েকবার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব। তার বড় ভাই শেখ ফজলে শামস পরশ আওয়ামী যুবলীগের সর্বশেষ জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোয়ন বোর্ডের গতকালের সভাকে কেন্দ্র করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলের প্রার্থিতা পেতে আগ্রহী সবাইকে গণভবনে ডাকা হয়। এর মধ্যে বোর্ড সদস্যরা সাঈদ খোকনকে ডেকে নিয়ে যান এবং তার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেন। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসেন তিনি। গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান ফটকে সাংবাদিকরা ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি নীরবে চলে যান।

অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি সম্পর্কে কথা বলতে চাইলে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চান। আর উন্নত দেশের উন্নত রাজধানী বিনির্মাণও অত্যন্ত আবশ্যক। সেই বিবেচনা থেকে প্রধানমন্ত্রী সিটি করপোরেশনকে দুভাগে বিভক্ত করলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা দেখছি যে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মানুষ কিন্তু এখনও অবহেলিত। তাদের মৌলিক সুবিধাগুলো এখনও পাচ্ছে না। এসব বিষয় আমাকে হতাশ করেছে, পীড়া দিয়েছে। এ কারণে আমি ভেবেছি যে, বৃহত্তর পরিসরে অর্থাৎ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দল যদি আমাকে মনোনীত করে এবং জনগণ নির্বাচিত করে, তা হলে আমি এ কাজগুলো করতে পারব।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামের। মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে জয় পেয়ে ৯ মাস উত্তরের নগরপিতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। এ সময় তার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি; উন্নয়ন কাজে তাকে সব সময়ই সক্রিয় দেখা গেছে।

উত্তরের মেয়র বলেন, স্মার্ট সিটি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকাকে ক্লিন, গ্রিন ও স্মার্ট সিটি করাই আমার লক্ষ্য। আমি চাই নগরবাসী আরও সচেতন হোক। নগরবাসী সচেতন হলে নগরকে সুন্দর ও পরিছন্ন হিসেবে গড়ে তোলা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। নিজ সংকল্পের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে সবার ঢাকা গড়ে তুলতে চাই যা হবে আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়