অনলাইন ডেস্ক: পুলিশের হামলা-নৃশংসতা শিকার ও আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন দিল্লির বিখ্যাত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমা আখতার। আজ সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার কথা জানান।
নাজমা আখতার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যেভাবে হামলা হয়েছে, তাতে আমি ব্যথিত। ছাত্রছাত্রীদের বলতে চাই, এই লড়াইয়ে তারা কেবল একা না, আমিও তাদের সঙ্গে রয়েছি।’
ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের বর্ণবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। এতে বহু শিক্ষার্থী আহত ও আটক হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় নাজমা আখতার বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে যতটা সম্ভব আমি কথা বলব।’
এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সহিংসতায়-বিক্ষত মূল সড়ক ধরে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে হাত উঁচিয়ে শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে। এ সময় পুলিশ তাদের তাড়িয়ে-ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জামিয়ার প্রধান প্রক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান বলেন, ‘পুলিশ জোর করে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। তাদের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমাদের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে। তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
লাইব্রেরিতে পড়তে বসা শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ বলে খবরে জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে স্থানীয়রাও বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ভিসি নাজমা বলেন, ‘পুলিশ যেভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, এটা ঠিক হয়নি। তাদের উচিত ছিল, অনুমতি নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকা।’
শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে জানিয়ে নাজমা আখতার বলেন, ‘তারা আহত হয়েছেন। এ হামলা ঠিক হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে, ক্যাম্পাসে পুলিশের ঢুকতে হলে আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে দেশটির পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে যা করার দরকার ছিল, তারা তা-ই করেছে।
এদিন রাতেই আটক সহপাঠীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে কয়েকশো শিক্ষার্থী দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তর ঘেরাও করেন। মাঝরাতের কড়া ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেও চলতে থাকে তাদের বিক্ষোভ। শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়ার পর কয়েক শত লোক দিল্লি পুলিশ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করতে গেলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।