শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৪:২৭ সকাল
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৪:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বুদ্ধিজীবীদের নিষক্রিয়তা দেশের আগ্রগতি ও প্রগতি পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে, অভিমত তরুণ ও প্রবীণ চিন্তাবিদদের

মঈন মোশাররফ : ক্ষমতার সঙ্গে যোগসূত্র থাকায় বর্তমানে অনেক বুদ্ধিজীবীরা তাদের ভূমিকা পালন করছেন না বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন তরুণ ও প্রবীণ চিন্তাবিদেরা। ডয়চে ভেলে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় যে বুদ্ধিজীবীদের কথা জানি সেই মানের ও চিন্তার বুদ্ধিজীবী ব্যতিক্রম ছাড়া আর নেই। নব্বই পর্যন্ত আমরা দলীয় বুদ্ধিজীবী দেখেছি। একদল অন্যায় করলে অন্যদলের বুদ্ধিজীবীরা কথা বলতেন। কিন্তু এখন কেউই কথা বলেন না, সবাই চুপচাপ হয়ে গেছেন। এর ফলে আমাদের প্রজন্ম চুপচাপ থাকাকেই স্বাভাবিক মনে করছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে।

তাঁর মতে, এই অবস্থা দেশের জন্য ভয়াবহ। দেশের অগ্রগতি ও প্রগতির পথ রুদ্ধ করে দেয় বুদ্ধিজীবীদের এই নিস্ক্রিয়তা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ আল মামুন বলেন, আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এখন প্রশ্নহীন হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করেন সব কিছু সেটেল হয়ে গেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ হলো মুক্তির প্রশ্ন। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে, কিন্তু মুক্তির প্রশ্ন সেটেল হয়নি।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের যে অবস্থা, গণতন্ত্রের যে অবস্থা, যে কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে তা অর্জিত হয়নি। কিন্তু বুদ্ধিজীবীরা এসব বিষয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাদের অধিকাংশ সরকার ও শাসন ব্যবস্থার সংকট নিয়েও কোনো কথা বলছেন না।
এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর দুইটি দিক আছে । প্রথমত ধর্মীয় বিশেষ করে ইসলাম নিয়ে এখানে এক ধরনের ডিলেমা আছে। তাই ধর্ম, ধর্মনিরপেক্ষতা এসব নিয়ে তারা কথা বলতে ভয় পান । আর তারা যেসব অন্যায্য সুযোগ সুবিধা পান তা হারনোর ভয়েও চুপচাপ থাকেন।

আর তরুন সাংবাদিক ও লেখক বাধন অধিকারী মনে করেন, বুদ্ধিজীবী হবেন নিঃসঙ্গ। তারা যেকোনো শক্তি বা ক্ষমতার বাইরে থাকবেন। তারা ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। আমরা একাত্তরে এই বুদ্ধিজীবীদের দেখেছি। তারা ছিলেন জনমুখী। কিন্তু এখনকার বুদ্ধিজীবীরা ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, এই কারণেই আমরা বড় ধরনের সংকটের মধ্যে আছি। আমরা সামগ্রিক একটা ভয়ঙ্কর নীরবতা লক্ষ্য করছি। কোনো অন্যায় বা অপকর্মের বিরুদ্ধে আমরা স্পষ্ট ও সোচ্চার কোনো প্রতিবাদ এখন দেখি না। এটা বুদ্ধিজীবীদের নিরবতার কারণেই হয়েছে।

এইসব মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একাত্তরপূর্ব বুদ্ধিজীবী যাদের আমরা একাত্তরে হারিয়েছি তাদের সমমানের বুদ্ধিজীবী এখন আর নেই বললেই চলে। যারা সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবী তারা কোনো বিষয়ে কোনো অবস্থান গ্রহণ করেন না। যেমন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখেই একই সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে আছে। এ নিয়ে কোনো বুদ্ধিজীবী কথা বলেন না। এরকম আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে।

তিনি বলেন, ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তা এবং ব্যক্তিআকাঙ্খা বড় হয়ে যাওয়ার কারণে এটা হয়েছে। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি । কিন্তু রাষ্ট্র স্বাধীন হয়নি এখনও। রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে আমাদের সচেতন বুদ্ধিজীবী শ্রেণি দরকার। সরকার ভালো কাজ করছে। কিন্তু অনেক প্রশ্নবিদ্ধ কাজও করছে। এ নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের সোচ্চার হওয়া দরকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়