নিউজ ডেস্ক : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিভিন্ন ধরনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী মোট ৪৮ জন। তাদের মধ্যে ৩৬ জনই ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত। তাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সমকাল
গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে সম্প্রতি আসামিদের ঠিকানা অনুযায়ী ৩০ জেলায় ও থানায় ছবিসহ চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের ফেরাতেও পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আসামিরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে দেশত্যাগ করে। তাদের মধ্যে অনেকের সন্ধান এখনও মেলেনি। এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কয়েক পলাতক আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শেষ হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১০ সাল থেকে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৯ বছরে ৪০টি মামলায় মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ড বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে ৯৪ যুদ্ধাপরাধীর। বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছে সাজাপ্রাপ্ত ৪৬ জন। পলাতক আসামির সংখ্যা ৪৮ জন। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ছাড়াও ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলায় তদন্ত বা বিচারকাজ চলছে এমন পলাতক আসামির সংখ্যা ৮৪ জন।
ট্রাইব্যুনাল যে ৪০টি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন সেগুলোতে মোট আসামি ১০৪ জন। তাদের মধ্যে রায় হওয়ার আগেই কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আটজন এবং রায়ের আগে পলাতক অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে দু'জনের।
এ বিষয়ে তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক এম সানাউল বলেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। পলাতকদের ছবি-সংবলিত চিঠি স¤প্রতি ৩০টি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্নিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিসহ অন্য কর্মকর্তাদের কাছে তদন্ত সংস্থা থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিদেশে পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, সাজাপ্রাপ্তদের রায় কীভাবে কার্যকর হবে, সেটা রায়ে বলা আছে। দেশের বাইরে যেসব ফাঁসির আসামি যুদ্ধাপরাধী পলাতক আছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে রেড অ্যালার্ট জারি করা হলেও গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের শুরুতেই রাজধানী ঢাকার উত্তরা থেকে পালিয়ে যায় জামায়াতের আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার। পিরোজপুরের সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির নেতা জব্বার ইঞ্জিনিয়ার ও ফরিদপুরের বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারির পরও তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।