সুজন কৈরী : কেরাণীগঞ্জের প্রাইম প্লাস্টিক কারখানায় আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে একজন মাহবুব। যিনি গ্রামের বাড়ী রংপুরের পীরগাছায় থাকা বাবা গোলজার হোসেনকে বলেছিলেন ঢাকায় আসার সময় গ্রাম থেকে খাটি মধু নিয়ে আসতে। মধু তার অত্যন্ত প্রিয় খাবার। ছেলের আবাদার অনুযায়ী অনেক কষ্টে বাবাও মধু যোগাড় করেন। আগামীকাল শুক্রবার গ্রাম থেকে কেরাণীগঞ্জে গিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করার ছিলো বাবার। সেই সঙ্গে ছেলের খোজখবরও নেয়া কথা ছিলো। কিন্তু ভয়াবহ আগুনে তার সেই ইচ্ছের মৃতু্য ঘটে। চিরতরে থামিয়ে দিল ছেলের সঙ্গে বাবার দেখা করা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সামনে বিলাপ করতে করতে এসব কথা বলছিলেন গোলজার হোসেন। বলেন, সবই গেল আমার।
তিনি জানান, কেরাণীগঞ্জের প্রাইম প্লাস্টিক কারখানায় বছরখানেক ধরে অপারেটর হিসেবে কাজ করছিলেন গোলজার-মোর্শেদা দম্পত্তির বড় সন্তান মাহবুব। মাহবুবের উপার্জন পরিবারটিতে কিছুটা স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছিলো। মাহবুবের ছোট এক ভাই ও এক বোন আছেন।
গুলজার টেলিভিশনে আগুনের ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ভাই লাবলু মিয়া ও অন্য স্বজনদের নিয়ে ছুটে আসেন ঢামেকে। আসতে আসতে রাস্তায় ছেলের ব্যবহৃত মোবাইলে অসংখ্যবার কল করেন কিন্তু সংযোগ পাননি। গোলজার বলেন, আসার পরে শুনছি মর্গে একটা লাশ আছে, যেটার পরিচয় নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। বহু কষ্টে আমার মেয়ে সেটাকে দেখে আসছে। সেটাই আমার মাহবুবের লাশ।
গুলজার বলেন, আগুন নিয়ন্তণের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি অঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে রাখা হয়। যা মাহবুবের লাশ বলে দাবি গোলজারের।
তিনি জানান, মাহবুব ডান হাতে ব্রেসলেট পড়ত। এটা দেখে আমার মেয়ে বুঝতে পেরেছে এটা মাহবুবেরই লাশ।
আপনার মতামত লিখুন :