সুপ্রীতি ধর : অভিজিতের লেখার একটা লাইন, ‘একদিন ছোটবেলায় জিজ্ঞাসা করলাম ‘বাবা তুমি ইন্ডিয়া যাওনি কেন, জ্যেঠু আর কাকুর মতো’? বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ইন্ডিয়া তো আমার দেশ নয়, ওখানে যাবো কেন’? এই লাইনটা হুবহু না হলেও আমার বাবাও ঠিক একই ধরনের কথা বলেছিলো তার তখনকার প্রেমিকাকে, মানে আমার মাকে। আমার মাসহ পুরো পরিবার নিয়ে তার বাবা ভারতে চলে গিয়েছিলো দেশভাগের সময়। বাবা-মা দুজন আগে থেকেই আজাদ হিন্দ ফৌজ করতো।
তাদের সময়ই সুভাষ চন্দ্র বোস ময়মনসিংহের গৌরীপুর যান। সেই মা যখন দেশ ছাড়তে বাধ্য হলো, তখন নিরুপায় হয়ে বাবাকে অনুরোধ করলো যেন সেও চলে যায়। ততোদিনে আমার জ্যেঠু, পিসিরাও একে একে চলে যাচ্ছে। বাবা তখন একটা চিঠিতে মাকে লিখেছিলো, যে ভিত্তিতে দেশভাগ হয়েছিলো, সেটা সঠিক ছিলো না, সে সেটা মানে না। তাছাড়া এই বঙ্গই তার দেশ, কাজেই কোথাও যাবে না। বরং কদিন পর সে কলকাতায় গিয়ে মাকেই নিয়ে আসবে এখানে। তাই হয়েছিলো শেষ পর্যন্ত। সেই যে এলো মা, আর গেলো না। সবাইকে ছেড়ে বাবার হাত ধরে চলে এসেছিলো জন্মের মতো। তখনো জানতো না মা, ঠিক কতোটা কষ্ট তার জন্য লেখা হয়ে আছে এই বঙ্গভূমিতে। আর বাবা তার সেদিনের অনড় সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত দাম চুকিয়েছিলো একাত্তরে নিজের জীবন দিয়ে। ঠিক এই জায়গাটিতে এসেই কোথায় যেন আমার বাবা আর অভিজিতের বাবা একই সমান্তরালে মিশে যান। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :