সমীরণ রায়: আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে কর্মযজ্ঞ চলছে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। শতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলী ও শ্রমিকরা কাজ করছেন। কেউ মঞ্চ তৈরির কাজ করছেন। কারো যেন দম ফেলানোর সময় নেই। কেউ সামিয়া টাঙানো ও লাইটিংয়ে ব্যস্ত। কেউ ইট-বালু পাথর ফেলে রাস্তা সংস্কার করছেন। কেউ আবার বিলবোর্ড ব্যানার, ফেস্টুন বানানোয় ব্যস্ত। সঙ্গত কারণে হাতুরির শব্দে এখন মুখরিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে ৬টি নৌকা। কোনোটি কালো রঙে আচ্ছাদিত হয়েছে। আর কোনোটি হার্ডবোর্ড দিয়ে তৈরির কাজ চলছে। উদ্যানের গাছে গাছে লাগানো হচ্ছে মরিচ বাতি। কেউ কেউ মাইক লাগানোয় ব্যস্ত রয়েছেন। শ্রমিকরা তালে তালে হাতুরি পিটিয়ে তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের বিলবোর্ড ও ফেস্টুন। এর পর সোজা গিয়ে হাতের বা দিকে গেলেই সম্মেলনের মূলমঞ্চ। মূলমঞ্চ তৈরি হচ্ছে পাল তোলা নৌকার আদলে। কারো যেন কথা বলার সময় নেই। সবাই ব্যস্ত। পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে রয়েছেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোক। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর দসস্যরা। এছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকায় লাগানো হচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড। একই সঙ্গে রাস্তা সাজানোর কাজও চলছে জোরেসোরে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে রাত-দিন কাজ করছে ১১টি উপ-কমিটি। সম্মেলন মঞ্চ হবে পদ্মার বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে নৌকা। নৌকার চারপাশজুড়ে পদ্মার জলরাশি। নৌকার পালগুলোতে থাকবে দলীয় প্রতীকসহ বিভিন্ন স্লোগান। থাকছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পাশাপাশি পদ্মার জলতরঙ্গ, পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়ানো ছোট ছোট নৌকা, চরের মধ্যে কাশবন এমন উপস্থিতি থাকবে মূলমঞ্চে। এছাড়াও জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিও থাকবে। এর পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকবে। নৌকার পেছনের দিকে থাকবে জাতীয় চার নেতাসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিভিন্ন সময় অবদান রাখা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছবি। এছাড়া সম্মেলনস্থলে সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের ফেস্টুন ও উন্নয়নের ছবি। মূল মঞ্চটি হবে ১০২ ফুট দীর্ঘ, ৪০ ফুট প্রশস্ত। আর সামনের পদ্মা সেতুতে থাকবে ৪০টি পিলার। এসব কাজ আগামী ১৫-১৬ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার করা হবে। এরপর ১৬ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার দিন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে সম্মেলনস্থলটি ঘুরে দেখার জন্য। এরপর ২০ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় শুরু হবে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। এতে সারা দেশ থেকে কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবেন। পরদিন ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হবে দলের কাউন্সিল অধিবেশন।
পদ্মা সেতুর মুল কাজটি করছেন গোলক বালা। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর মূল কাজ শুরু করেছি। এ কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এখানে থাকবে পদ্মার জলরাশি। ছোট ছোট নৌকা থাকবে চারপাশে। আমরা আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। আমরা যথা সময়েই করে ফেলবো।
বিলবোর্ড তৈরির কাজ করছেন মহরম। তিনি বলেন, আমদের শ্রমিকরা দিন রাত পরিশ্রম করছেন। আমাদের কাজগুলো আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে আমরা কাজগুলো শেষ করতে পারবো।
আপনার মতামত লিখুন :