মহসীন কবির : বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরের একটি বাড়ি থেকে শাশুড়ি, মেয়েজামাইসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (০৮ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বানারীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) জাফর আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, নিহত মরিয়ম বেগমের ছেলে ও বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের ভাই সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৩০২ ধারাসহ বেশ কয়েকটি ধারা রয়েছে।
তিনি জানান, এ মামলায় কোনো নামধারী আসামি নেই। অজ্ঞাতদের আসামি করা হলেও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। তবে, ইতোমধ্যে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পূর্ব রায়পাশা গ্রামের চুন্নু হাওলাদারের ছেলে জাকির হোসেন ও তার সহযোগী জুয়েলকে আটক এবং কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান ওসি। তবে তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে কি-না সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে চাননি তিনি। এদিকে ঘটনার রহস্য উন্মোচন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুত হত্যার রহস্য উন্মোচন ও জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
শনিবার (০৭ অক্টোবর) সকালে বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরের কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের বাড়ি থেকে তার মা মরিয়ম বেগম (৭০), মেজ বোন মমতাজ বেগমের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শফিকুল আলম (৬০) ও খালাতো ভাই মো. ইউসুফের (২২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মরদেহগুলোর সুরতহাল শেষে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত গতকালই সম্পন্ন হয়। তবে স্বজনরা দেশের বাইরে থাকায় ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো মর্গের ফ্রিজারে রাখা হয়। রোববার স্বজনরা মরদেহগুলো গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাবেন এবং দাফন সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মরদেহগুলো যে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সে বাড়ির মালিক কুয়েত প্রবাসী আব্দুর রবের ভবন নির্মাণের সময় জাকির নামে ওই রাজমিস্ত্রী কাজ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি ঝাড়ফুঁকের কাজও করতেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, প্রবাসীর পরিবারের কতিপয় সদস্যের সঙ্গে ভণ্ড ফকির জাকিরের সখ্যতাও রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি পুলিশের পক্ষ থেকে।
এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী আব্দুর রবের স্ত্রী মিশরাত জাহান মিশু ও তার ভাইয়ের মেয়ে বানারীপাড়ার চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী আছিয়া আক্তারের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরেই জাকির হোসেনকে আটক করা হয়।
এ ঘটনার পর অনেক তথ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে আসতে শুরু করে। যার মধ্যে প্রণয়, ঝাড়ফুঁকসহ বেশি কিছু ঘটনা রয়েছে। তবে শুরুতে এ পরিবারের সদস্যরাই জমি নিয়ে বিরোধের কথা বলে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং নিশ্চিত হয়েই বিস্তারিত জানাবে তারা।
আপনার মতামত লিখুন :