শাহীন খন্দকার : সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডের বিরোধীতা করতে পারে না। কারণ বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দু থাকেন বলেই। ফলে আমাদের দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছে না। জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি বলেন, ’৯০ সালের আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকেই স্বৈরাচার নামে অভিহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এই সংবিধানে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা আমরা করতে পারছিনা। তিনি বলেন, আমরা সংসদীয় পদ্ধতির মূল স্পিরিট বা আসল ধারণা গ্রহণ করতে পারিনি। বক্তব্যে বলেন ৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বা বিবেচনার ওপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হবে, দলের বাইরে তারা যেতে পারেনা। সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের আসল কেন্দ্রবিন্দু করা আমাদের সংবিধান এ্যালাও করে না এবং সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহিতা এটাও আমাদের সংবিধান এ্যালাও করে না।
এ কারণেই আগে পিছে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। কিন্তু সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন শুধু একজনকে তিনি হচ্ছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অপবাদ দিয়েই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির ওপর চরম অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে। শুক্রবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সাল চিশতীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, যদি সংবিধানের ৭০ ধারা উঠিয়ে দেয়া হয় এবং এমপিরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে তাহলে সরকারের স্থায়ীত্ব কম হবে। এতে প্রতি মাসেও সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কোন বিল পাস করতেও সমস্যা হবে সরকারের। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি সংবিধান সংরক্ষণ করতে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের তুলনা হয় না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, দেশে বিশ্বজিৎ হত্যা হয়, আবরার হত্যা হয়। সারের জন্য কৃষককে প্রাণ দিতে হয়, এটাকে আমরা গণতন্ত্র বলতে পারি না। এরশাদকে যারা স্বৈরাচার বলেন, তাদের লজ্জা করা উচিৎ । দেশের উন্নয়ন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শাসনামলে হয়েছে। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য- জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান- নুরুল ইসলাম নুরু প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :