ডেস্ক নিউজ : রাজধানীর পল্লবীতে পুলিশ হেফাজতে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দুই এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু ও রাশেদুল হাসান এখনও চাকরিতে বহাল। আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু হলে দায়িত্বে থাকতে পারেন না কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। সূত্র:ডিবিসি নিউজ
অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালত স্থগিত করেছে। যদিও নয় মাস আগে সেই স্থগিতাদেশ বাতিল করে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুহাজার চৌদ্দ সালে পুলিশের হেফাজতে ছেলে ইশতিয়াক হোসেন জনিকে হত্যার স্মৃতি আওড়াতে আওড়াতে ডুকরে ওঠেন মা খুরশিদা বেগম। বিয়ের আসরে পুলিশের সোর্স সুমনের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার জেরে জনি ও তার ভাই রকিকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।কয়েক ঘণ্টা পর পল্লবী থানায় নির্যাতনে মারা যান জনি।
নিহতের ভাইয়ের মামলায় দুহাজার ষোলোতে পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, এএসআই রাশেদুল হাসান এবং তাদের দুই সোর্স রাসেল ও সুমনের বিরুদ্ধে শুরু হয় বিচার। এখন চলছে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।
মামলার বাদি মোহাম্মদ রকি বলেন, তারা অভিযুক্ত থাকা সত্ত্বেও যদি চাকরী করে তাহলে তো এই মামলার ভবিষ্যত অন্ধকার। তারা বিভিন্নভাবে এই মামলা দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে, আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
তিন পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে এসআই জাহিদ কারাগারে থাকলেও এএসআই রাশেদুল মিরপুর আর মিন্টু বাড্ডা থানায় কর্মরত। অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা জানান, গেল বছর মামলাটিতে উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দেয়ার পর থেকে চাকরি করছেন তারা।
অভিযুক্ত মিরপুর থানা্র এএসআই রাশেদুল হাসান বলেন, আমরা বেশকিছু দিন বহিষ্কার ছিলাম। কিন্তু হাইকোর্টে রিট করার পর সেখান থেকে অনুমতি নিয়ে আমরা আবার চাকরি করছি। গত ফেব্রুয়ারিতে সেই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে ১৮০ কার্য দিবসে মামলা নিষ্পত্তির আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। আইনজীবীরা বলছেন, স্থগিতাদেশের সঙ্গে চাকরিতে বহালের কোনো সম্পর্ক নেই।
ব্লাস্টের আইন উপদেষ্টা এডভোকেট এস এম রেজাউল করিম বলেন, কোন সরকারি কর্মকর্তা যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হোন এবং ওই মামলায় যদি সে জেল হাজতে প্রেরিত হয় বা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হোন। তাহলে বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের ৭৩ এর দুই নম্বর নোট অনুযায়ী তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে হবে। তার চাকরিতে বহাল থাকার কোন সুযোগ নেই।
তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ।তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় তারা এখন কর্মরত আছে। তারা ছুটি নিয়েই আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন। যেহেতু তাদের নাম ছিল না এবং তাদের নামে কোন সাংসরও নেয় নাই এ কারণে তারা চাকরি করেন।
বিধিবহির্ভূতভাবে দুই পুলিশ কর্মকর্তা চাকরিরত থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। সম্পাদনা: জেরিন মাশফিক
আপনার মতামত লিখুন :