শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ◈ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ: এডিবি ◈ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৪ সদস্য ◈ ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার তালিকা প্রকাশ করুন: মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৯:২৯ সকাল
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৯:২৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মিশ্র ফল চাষে সফল মাগুরার নাসির

রক্সী খান, মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মিশ্র ফল চাষ করে সফল হয়েছেন মাগুরা সদরের রাউতড়া গ্রামের তরুণ যুবক নাসির । এ মিশ্র ফলের মধ্যে রয়েছে থাই পেয়ারা-৫, পেঁপে, কলা, লিচু, ড্রাগন , মাল্টা ও কাশ্মীরি কুল । এ ফলগুলো জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলা গুলোতে বাজারজাত করা হচ্ছে।

নাসির জানায়, আমার পিতা জামির হোসেন একজন আদর্শ কৃষক । তিনি দানাজাতীয় বিভিন্ন ফসল চাষ করেন । লেখাপড়া শেষ করে আমি বেকার যুবকের মতো বিভিন্ন জায়গায় চাকুরির জন্য ধন্না দিতে আসছিলাম । তারপর তিনি আমাকে কৃষিকাজে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করতে উৎসাহিত করেন এবং কৃষি অফিসে নিয়ে যায় । প্রথমে ফুল চাষ দিয়ে আমি যাত্রা শুরু করি । নিজের অল্প জমিতে চাষ করি গার্ডিয়াস ফুল । তারপর বাজারজাত করা শুরু করি । কিন্তু অল্প জমিতে ফুল চাষ করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ি । তারপর মাগুরা হর্টি কালচারের উদ্যানতত্ত! বিদ ড. খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সাথে পরিচয় হয় । তিনি আমাকে মিশ্র ফল জাতীয় বিভিন্ন চাষে কাজ করার জন্য উৎসাহ দেন । তার পরামর্শে আমি এ চাষ শুরু করি । প্রথমে নিজের ৫ একর ও পরে ১০ একর জমিসহমোট ১৫ একর জমিতে মিশ্র জাতীয় ফল থাই পেয়ারা-৫, পেঁপে, কলা, লিচু, ড্রাগন , মাল্টা ও কাশ্মীরি কুলের চাষ শুরু করি । নিজের পুঁজি কম থাকায় টাকা লোন করে মিশ্র ফল চাষ করি । এ চাষে হর্টিকালচারের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ আমাকে বেশি উদ্ধুদ্ধ করেছে । চাষের ব্যাপারে কোনো সমস্যা হলে তাদের সহযোগীতা খুব পেয়েছি । বিশেষ মনিরুজ্জামান স্যার নিজে আমার মাঠে গিয়ে পরামর্শ ও সেবা দিয়েছেন ।

নাসির আরো জানায় ,বর্তমানে ৫ একর জমিতে আমি থাই-৫ পেয়ারার চাষ করেছি । সারা বছরই এ পেয়ারার চাষ হয় । আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় এ পেয়ারার চাহিদা খুববেশি । প্রতিদিন দেড় থেকে দুই মণপেয়ারা ক্ষেত থেকে উত্তোলন করা হয় । পাইকারি ক্রেতারা ক্ষেত থেকেই ফল কিনে নিয়ে যায় । প্রতিমণ পেয়ারা ২ হাজার টাকা বিক্রি হয় ।

তাছাড়া, ৩৩ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি ড্র্গান ফল । সাধারণ ড্রাগন ফলের মৌসুম শুরু হয় মে মাস থেকে নভেম্বর মাস । গাছে ফুল আসার ৪৫ দিন পর ফল আসা শুরু হয় । তারপর ফল একটু লাল রঙ ধারণ করলে তা সংগ্রহ করে বিক্রি শুরু হয় ।

তিনি আরো জানান, জেলায় এ প্রথম বারের মতো চাষ করেছি কাশ্মীরি কুল । ৩ একর জমিতে আমি এ চাষ করেছি ।

এ ফল খুবই সুস্বাদু ও রসালো । ১০ থেকে ১২টা ফলে ১কেজি হয় । আকারে বেশ বড় ও দেখতে লাল রঙের । এ ফলের চারা রোপন করতে হয় ফাল্গুন মাসে । আশ্বিণ-কার্তিক মাসে ফুল আসে । তারপর কার্তিক মাসের শেষের দিকে ফল আসতে শুরু করে । পৌষ-মাঘ মাসে এ ফল পরিপূর্ণ আকার ধারণ করে । এ চাষে আমার সার-বীজ-চারা বাবদ ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে । পাশাপাশি পেঁপে , কলা, লিচু ও মাল্টা ও ভিয়েতনামী নারকেল চাষ করছি ।

কথা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এসব বাগানে প্রতিদিন ৩-৪ জন শ্রমিক কাজ করে । প্রত্যহ দিন তাদের মুজুরি বাবদ ৩০০-৪০০ টাকা দেয়া হয় । আমি সব সময় ক্ষেত পরিচর্যা করি । পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় আমাকে নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করেন । প্রতি বছর এ মিশ্র ফল চাষে আমার প্রায় ২৪-২৫ লাখ টাকা আয় হয় । খরচ বাদে আমার ১৫ লাখ টাকা থাকে । আগামীতে কৃষি বিভাগের আরো সহযোগীতা পেলে আমার মিশ্র ফল চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে । বর্তমানে আমার ফল রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর , ঝিনাইদহ, নড়াইল , মাদারীপুর ,কালিগঞ্জ,কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় বাজারজাত হচ্ছে।

মাগুরা হর্টি কালচার সেন্টারের উদ্যান ত্তত্ববিদ ড. খান মো: মনিরুজ্জামান বলেন, নাসির খুব পরিশ্রমি যুবক । তার মধ্যে মেধা,ধৈয্য ও কাজ করার মানষিকতা খুবই ভালো । আমরা তাকে সব সময় ভালো পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের চেষ্টা করছি । নাসিরের দেখে জেলার আরো অনেক উদ্যোমী যুবক এ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে । সম্পাদনা : জেরিন মাশফিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়