শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৬:৩০ সকাল
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৬:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একসঙ্গে ২০ কর্মকর্তা-কর্মচারির বদলি

ডেস্ক রিপোর্ট  : হাইকোর্টের এফিডেভিট ও ফাইলিং শাখায় অনিয়ম আর হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্কও করা হয়। লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা । এতেও সুরাহা মিলেনি। অভিযোগের সূত্র ধরে রোববার এই দুই শাখার বেশ কয়েকজনকে বদলি করা হয়। সোমবার বদলি করা হয়েছে বাকি সব কর্মকর্তা-কর্মচারিকে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারিকে এক সঙ্গে বদলির ঘটনা এর আগে ঘটেনি।

সোমবার এই দুই শাখার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেন খোদ রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

নির্ধারিত মামলার শুনানি করতে গিয়ে তিনি আদালতের কাছে জানতে চান, একটি মামলা শুনানির তিন নম্বর সিরিয়ালে (আপিল বিভাগের কার্যতালিকায়) থাকার কথা। কিন্তু অদৃশ্যভাবে তা ৮৯ নম্বর সিরিয়ালে গেছে। কীভাবে এতো পেছনে গেলো? এর কারণ জানতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তাৎক্ষনিক ডেপুটি রেজিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসানকে তলব করেন। তলবে হাজির হয়ে তিনি তার ব্যাখ্যা দেন। পরে ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। পুরো বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ফাইলিং ও এফিডেভিট শাখার অবশিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিকে বদলির আদেশ দেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রশাসনিক প্রয়োজনে এদের বিভিন্ন দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, অনিয়মের অভিযোগ ওঠা এফিডেভিট শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলির ঘটনা প্রমাণ করে, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে। তিনি বলেন, যখনই কোনো প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ঢুকে যায়, তখন সেই দুর্নীতি রোধের জন্য কতগুলো পদক্ষেপ নিতে হয়। প্রধান বিচারপতি সেদিন বলেছেন, তিনি কঠোর হস্তে এগুলো দমন করার চেষ্টা করছেন। তাই আমি মনে করি, এফিডেভিট ও ফাইলিং শাখায় বদলি তার কঠোর অবস্থানের একটি প্রমাণ।

এদিকে, প্রধান বিচারপতির নজিরবিহীন এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট ও পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন লিমন বলেন, মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে কোর্টের বিভিন্ন শাখায় হয়রানি ও অনিয়মের স্বীকার হতে হয়। প্রধান বিচারপতি যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ.এম. আমিন উদ্দিন। তিনি মনে করেন, প্রশাসনের এমন উদ্যোগ অনিয়ম দূর করতে সহায়ক হবে। অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, গতবার আমি যখন সভাপতি ছিলাম তখন সুপ্রিম কোর্টের কোথায় কোথায় দুর্নীতি হয় তা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রধান বিচারপতি বরাবর জমা দিয়েছিলাম। ওই প্রতিবেদনে এই দুই শাখার অনিয়মের কথাও বলা হয়েছিল।

জানা গেছে, বদলি হওয়া কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে এফিডেভিট শাখার ৫ সুপার ও ৫ এমএলএস রয়েছেন। একইসঙ্গে শূণ্য হওয়া ৫ সুপারের স্থলে ৪ জন এবং ৫ এমএলএমএস কে নতুন করে পদায়ন করা হয়েছে। অপরদিকে, ফাইলিং শাখার সুপার মফিজুর রহমান ও ৪ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া একজন এমএলএসকে বদলি করা হয়েছে। শূণ্য পদে বিভিন্ন দপ্তরে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের গত রোববার ও সোমবার বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের দুটি শাখার প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। তারা হাইকোর্টের বিভিন্ন শাখায় বদলি করা হয়েছে। রোববার ও সোমবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার সিসি ক্যামেরা বসানোর পরও সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট শাখায় অনিয়ম বন্ধ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে তিনি একটি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে এই মন্তব্য করেন। নির্ধারিত মামলার শুনানি করতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, একটি মামলা শুনানির তিন নম্বর সিরিয়ালে (আপিল বিভাগের কার্যতালিকায়) থাকার কথা ছিল। কিন্তু অদৃশ্যভাবে তা ৮৯ নম্বর সিরিয়ালে গেছে। কীভাবে এতো পেছনে গেলো, তা আপিল বিভাগের কাছে জানতে চান তিনি। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, কী আর করবো বলেন? সিসি ক্যামেরা বসালাম (এফিডেভিট শাখা কক্ষে), এখন সবাই বাইরে এসে এফিডেভিট করে। সিসি ক্যামেরা বসিয়েও অনিয়ম রুখতে পারছি না। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অনেকেই মামলার তালিকা ওপর-নিচ করে কোটিপতি হয়ে গেছে। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের অনেক আইনজীবীও আদালতে আসেন না। বেতন বেশি হওয়ার কারণে এমন হচ্ছে। বেতন কম হলে তারা ঠিকই কষ্ট করে আদালতে আসতেন। পরে প্রধান বিচারপতি তাৎক্ষণিক ডেপুটি রেজিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসানকে আপিল বিভাগে তলব করেন।

উৎসঃ মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়