তন্নীমা আক্তার : সম্প্রতি ১৫ কোটি বছর পুরনো প্লিওসর নামের এক জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিশালাকার সেই জীবাশ্ম দেখে অনেকটা আশ্চর্য হয়েছেন তারা। তাদের মতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং হিংস্র মাংসাশী প্রাণী ছিল এই প্লিওসর। নতুন এই অনুসন্ধানের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রসেডিংস অব দ্য জিওলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’ নামক একটি জার্নালে। এই অনুসন্ধানের আগ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর প্রানী হিসেবে ধারনা করা হতো ডাইনোসর প্রজাতির টিরানোসরাস রেক্সকে। আনন্দবাজার
এই অনুসন্ধান কে বিজ্ঞানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সে সময়ের একটি বিশালাকার সরীসৃপ ছিলো প্লিওসরাস। খোঁজ পাওয়া প্লিওসরটি প্রায় ৩৩ ফুট লম্বা। তবে সে সময়ে খোঁজ পাওয়া এই প্লিওসরটির থেকেও আরও অনেক বড় প্লিওসর ছিল বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এদের চোয়ালে দাঁতের বিন্যাস ছিল অনেকটা কুমিরের মতো। প্লিওসরের চোয়াল টিরানোসরাসের চোয়ালের থেকেও পাঁচ গুণ বেশি শক্ত ছিল। দাঁতও ছিল ভীষণ ধারালো। এরা যা পেত, তাই খেত। এরা এতটাই ক্ষমতাশালী ছিল যে, প্রয়োজনে টিরানোসরাসদেরও চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারত তারা। তবে বিশালাকার এই প্লিওসররা সমুদ্রে বাস করত। সাঁতারের সুবিধার জন্য তাদের পাগুলো ছিল মাছের পাখনার মতো।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সমুদ্রের সমস্ত প্রাণী, এমনকি তিমিদেরও খেয়ে ফেলত তারা। প্লিওসরদের পেশি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, সমুদ্রের উপরে জলের কাছাকাছি উড়ে যাওয়া বড় আকারের পাখিদেরও এরা ঝাঁপিয়ে সহজেই ধরে ফেলতে পারত। প্লিওসরের জীবাশ্মের মধ্যে আবার সে সময়কার বিশাল সামুদ্রিক কচ্ছপের জীবাশ্ম মিলেছে। সামুদ্রিক কচ্ছপের খোলকের উপর প্লিওসরের ধারালো দাঁতের চিহ্ন মিলেছে। খোঁজ পাওয়া প্লিওসরটি সামুদ্রিক কচ্ছপকে খেয়েছিল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি পোল্যান্ডের সুইতোকার্জিকির কাছে একটি ভুট্টা খেতের মধ্যে প্লিওসরের এই জীবাশ্মের অস্তিত্ব মিলেছে। পোল্যান্ডের এই অঞ্চলটিতে আগেও প্রচুর জীবাশ্মের সন্ধান মিলেছে। এর আগে ৮০ কোটি বছরের পুরনো এক বিশাল সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্ম উদ্ধার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সম্পাদনা : আসিফুজ্জামান পৃথিল
আপনার মতামত লিখুন :