কামরুল হাসান মামুন : আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বনসাই বানিয়ে রাখার সব ব্যবস্থা দিন যতো যাচ্ছে ততোই মজবুত হচ্ছে। সম্প্রতি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রভাষক পদে ২৪ জনকে এবং সহকারী পদে একজনকে ইন্টারভিউ কার্ড পাঠিয়েছে যাদের কারও পিএইচডি নেই। অথচ আমার জানামতে, একজনের অন্তত পিএইচডি ছিলো এবং পৃথিবীসেরা জার্নালের একটিতে প্রথম অথর হিসেবে প্রকাশনা ছাড়াও আরও আর্টিকেল ছিলো।
অথচ তাকে ইন্টারভিউ কার্ডই দেয়নি। যাদের অনেককে কার্ডই হয়তো পাঠানোর কথা না তাদের পাঠিয়েছে আর এদের মধ্যে একজনকে পাঠালেও যাকে পাঠানো উচিত তাকে পাঠায়নি। অতি সম্প্রতি শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিতুমীর ও ইডেন কলেজ থেকে পাস করা দুজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার বিশেষ কোনো রাগ বা বিরাগ নেই। তবে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সবার মধ্যে একটি পারসেপশন তো আছে। সেই পারসেপশন তো আর এমনি এমনি হয়নি। তিতুমীর ও ইডেন কলেজ থেকে পাস করে যদি দেশের বাইর থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে এসে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে নিয়োগ পেতো আমার কোনো আপত্তি থাকতো না। দেশে কি ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে ভালো শিক্ষকের আকাল পড়লো নাকি? এভাবে দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ যদি আমরা একটি পরখ করি তাহলে স্পষ্ট হয়ে যাবে এই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি শীঘ্র বাংলাদেশের সরকারি প্রাইমারি স্কুলের অবস্থা হবে। ইতোমধ্যেই তা হয়ে গেছে। সরকার ইচ্ছে করে নিজের পছন্দমতো দলান্ধ শিক্ষকদের ভিসি, প্রো-ভিসি বানাচ্ছে আর তারা অন্ধের মতো ভালো রেখে মন্দদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। এভাবে অশিক্ষকের সংখ্যা এখন এতো বেড়ে গেছে যে, এই মেজোরিটি খারাপদের আচরণ দেখে সমাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পর্কে একটি বিরূপ পারসেপশন তৈরি হয়েছে। ফলে দেশের উচ্চ শিক্ষা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :