দেবদুলাল মুন্না: ভারতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষকদের কাছে সংস্কৃত পড়তে নারাজ শিক্ষার্থীরা চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আন্দোলন করে। এই আন্দোলন কোলকাতা পর্যন্ত গড়ায়। কোলকাতার হিন্দু কলেজেও গত ২২ নভেম্বর একই দাবিতে আন্দোলন করে। এসব দেখে নীরব প্রতিবাদ করে চাকরিই ছেড়ে দিলেন একজন শিক্ষক। তার নাম গোপালিকা অন্তর্জনম।তার জন্ম ব্রাহ্মণ পরিবারে। কিন্তু শিক্ষকতা করতেন কেরালার মালাপ্পুরুম জেলার একটি স্কুলে। সেখানে তিনি ২৯ বছর ধরে আরবি পড়াতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ছেড়ে দিলেন এ পেশা প্রতিবাদস্বরুপ। খবর হিন্দুস্থান টাইমস ও নিউজ পোল’র।
তিনি বলেন, ‘ আমার জন্ম ত্রিচুরের কোন্নাকুলম গ্রামে। আমাদের গ্রামে কোনোদিন সাম্প্রদায়িক বৈষম্য ছিল না। শৈশবে আমার বিভিন্ন ভাষার প্রতি দুর্বলতা ছিল। আমার মতো অনেক ব্রাহ্মণ সন্তানরা আরবি শিখেছেন। আমি মুলত কবি জালাউদ্দীন রুমি পড়ার অঅরবি ও পার্সি শিখি। এরপর আমার বিয়ে হয় নারায়ণের সঙ্গে। বিয়ের পরপরই একটি স্কুলে আরবি শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে যোগ দিই। কিন্তু সেসময়ও রক্ষণশীল হিন্দুরা বলেন যে হিন্দু ব্রাহ্মণ হয়ে আরবি পড়ানো যাবে না। তারা মামলা পর্যন্ত করেন। আমিও নাছোড়বান্দা ছিলাম। শেষপর্যন্ত কেরালা হাইকোর্টে আবেদন করে ১৯৮৯ সালে মামলা জিতি আমি। কেরালা পাবলিক সার্ভিস কমিশন আমার চাকরি চুড়ান্ত করে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে এখনও আমাদের দেশে এসব সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের মনে কারা । তাই সম্প্রতি মুসলিম শিক্ষকদের যে সংস্কৃত বিষয়ে নিয়োগ না দেওয়ার আন্দোলন শুরু হয়েছে এরই প্রতিবাদস্বরুপ আমি চাকরি থেকে স্বইচ্ছায় অবসর নিলাম।’
তিনি বলেন, ‘ আগামী বছরের ৩১ মার্চ আমার অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগেই নিলাম। ’ এদিকে ২০১৮ সালে মুসলিম সংগঠন ‘ কেরালা মুসলিম ওয়েলফেয়ার সেন্টার’র পক্ষ থেকে বিশ্ব আরবি দিবসে তাকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :