শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ০৭:৪৭ সকাল
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ০৭:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ধর্মঘটের অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারে

যুগান্তর : পরিবহন ধর্মঘটের অজুহাতে আবারও বাড়ানো হয়েছে পেঁয়াজের দাম। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সর্ববৃহৎ পেঁয়াজের পাইকারি আড়ত শ্যামবাজারে কেজিতে আগের দিনের তুলনায় ২০ টাকা বেড়েছে।

এদিন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৫০ টাকা। যা একদিন আগে (বুধবার) বিক্রি হয় ১২০-১৩০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে কোনো অজুহাতের প্রভাব পড়েনি। ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০-২০০ টাকা। প্রায় একই দাম ছিল আগের দিনও। এছাড়া পাইকারি বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে গড়ে প্রতি কেজি ৯০ টাকা।

এছাড়া পাকিস্তান থেকে বিমানে আনা পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে সরাসরি ১৭০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন আমাদানিকারক নিজেই। বৃহস্পতিবার আমদানিকারক শাদ এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন পবিত্র ভাণ্ডার রাজধানীর শ্যামবাজার আড়তে এ পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে।

যদিও এগুলো টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ) মাধ্যমে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় অনুমোদন না মেলায় টিসিবি এ পেঁয়াজ কিনতে পারছে না। বুধবার বেসরকারি একটি বিমানে সাড়ে ৮১ টন পেঁয়াজের প্রথম চালান দেশে আনে শাদ এন্টারপ্রাইজ। পর্যায়ক্রমে অন্য কোম্পানির আরও কয়েকটি চালান আসার অপেক্ষায় আছে।

এ ব্যাপারে সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিমানে আনা পেঁয়াজ টিসিবির কাছে হস্তান্তর করে বিক্রি করা হবে।

জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, আকাশপথে আসা পেঁয়াজ টিসিবি গ্রহণ করতে প্রস্তুত আছে। আর অতি অল্প সময়ের মধ্যে তা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে টিসিবির ডিলাররা প্রস্তুত।

তবে এ পেঁয়াজ গ্রহণ করার একটা প্রক্রিয়া আছে। প্রক্রিয়ার সব কাজ শেষে টিসিবির কাছে হস্তান্তর হয়। টিসিবি সরাসরি এটা নিতে পারে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী টিসিবি সরসরি পণ্য কেনে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আকাশ ও সমুদ্রপথে পেঁয়াজের চালানগুলো দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান থেকে এসব পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। সরকার পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে দেশি পেঁয়াজ (পাতাসহ) বাজারে এসেছে। এতে পেঁয়াজের মূল্য দ্রুতগতিতে কমছে। এখন পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক হচ্ছে।

পবিত্র ভাণ্ডার আড়তের এক কর্মকর্তা বলেন, ৭০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে। বিমান ভাড়া হিসাব করে প্রতি কেজির দাম ১৭০ টাকা ধরে লোকসান দিয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজও বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এখন যদি কমে পণ্যটি না ছাড়া হয়, তবে লসের পরিমাণ আরও বাড়বে।

শ্যামবাজারের একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, পেঁয়াজের দর যাতে ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতায় আনা যায়, এজন্য জরুরি ভিত্তিতে বিমানে দেশে পেঁয়াজ আনে শাদ এন্টারপ্রাইজ। টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করার কথা ছিল।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তারা এখন নিজ উদ্যোগে বিক্রি করছে। এ পেঁয়াজ বিমানে আনতে খরচ বেশি হয়েছে। টিসিবির কাছে হস্তান্তর করা গেলে আমদানিকারকের সব খরচ মিলিয়ে বিক্রি করতে পারত। পরে সরকার এ পেঁয়াজে ভর্ভুকি দিয়ে বিক্রি করলে তা সাধারণ ভোক্তা কম দামে কিনতে পারত।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামবাজার ঘুরে ও পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা একদিন আগে বুধবার বিক্রি হয় ১২০-১৩০ টাকা।

এছাড়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। যা একদিন আগে ৯০ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-১১০ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা।

জানতে চাইলে পাইকারি ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) একটু বাড়তি।

কারণ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বুধবার বিভিন্ন জেলা থেকে পেঁয়াজের চালান ঢাকায় আনা সম্ভব হয়নি। যে কারণে দাম একটু বাড়তি। তবে ধর্মঘটের প্রভাব শেষ হলে পণ্যটির দাম আরও কমে আসবে।

একই দিন রাজধানীর নয়াবাজার, রামপুরা বাজার, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছে ১৮০-২০০ টাকা। যা বুধবার একই দরে বিক্রি হয়েছে।

আমদানি করা মিয়ানমার ও মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা। এছাড়া নতুন পাতাসহ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা।

নয়াবাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আলী আকবর বলেন, পাইকারি বাজারে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে নতুন করে পেঁয়াজ না আনায় খুচরা আগের দরেই বিক্রি করছি। যাদি আমাদের বেশি দামে আনতে হয়, তবে আমাদেরও বেশি দরে বিক্রি করতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত বাজারে পেঁয়াজের দর বাড়েনি। আর সম্ভাবনাও খুব কম। কারণ প্রতিদিন কঠোর ভাবে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, ক্রেতার কাছে ন্যয্যমূল্যে পণ্যটি পৌঁছাতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভাগ ও জেলায় ৪৫ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় জোরদার করা হয়েছে। তাছাড়া রাজধানীতে ৩৫ স্থানের বিপরীতে ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাকসেলের মাধ্যমে এ পেঁয়াজ বিক্রয় চলছে। পণ্যটির দাম ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়