আলী রীয়াজ : সম্ভবত গত বছর, ঢাকায় স্বল্পকালীন সময়ের জন্য গিয়ে টিভিতে একটা বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম অনলাইনে বিক্রির, ইবে জাতীয় সাইট, স্লোগান ছিলো ‘ছবি তুলুন, পোস্ট করুন আর বেচে দিন’। বিজ্ঞাপনটি দেখে মনে প্রশ্ন জাগলো এটাই কি এই সময়ের আদর্শ? ‘বেচে দিন’ সাংবাদিক-লেখকরা কলম বেচে দিচ্ছেন, বুদ্ধিজীবীরা আত্মা বেচে দিচ্ছেন, তরুণরা মেধা, পণ্য হয়ে উঠেছে সব কিছু। সরকার বিক্রি করছে বন-প্রকৃতি, দল বিক্রি করছে লুট করার সুযোগ। বেচে দিন এখন বিক্রির সময়। যা পারেন বিক্রি করুন। এই এক অদ্ভুত সময় পুঁজিবাদের সবচেয়ে খারাপ জিনিসটাই ধারণ করেছে বাংলাদেশের মানুষ। সেখানে প্রাণ-প্রকৃতি বলে কিছু নেই। ভালো করে তাকালে মনে হয় ধর্ম নেই বিক্রি হয়ে গেছে, দেশপ্রেম নেই বিক্রি হয়ে গেছে। আদর্শ একটাই বেচে দিন। ২. কেবল ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ ছড়াতে চাইলেই গুজব ছড়ায় না।
প্রকৃত তথ্যের অভাবে গুজব ছড়ায়, তার চেয়েও বড় কারণ হচ্ছে আস্থাহীনতা। যখন ‘নির্ভরযোগ্য’ সূত্রগুলোর উপরে আর আস্থা রাখা যায় না, যখন ‘দায়িত্বশীল’ সূত্রগুলো ইতোমধ্যেই সাধারণের আস্থার জায়গা থেকে সরে যায়, যখন সরকারি ভাষ্যকে নেহায়েতই মিথ্যাচার বলে মনে করার পক্ষে যথেষ্ট উদাহরণ তৈরি হয় তখন মানুষকে বিশ্বাস করতে হয় ‘গুজবে’র উপরে। জবাবদিহি অনুপস্থিত থাকলে মানুষ ধরেই নেয় কর্তৃপক্ষ বা সরকার যা বলছে তা অগ্রহণযোগ্য। তদুপরি সর্ব ক্ষেত্রে যখন গোষ্ঠীর আধিপত্য তখন এটাই বিশ্বাসযোগ্য হবে যে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠের নয়, ক্ষুদ্র সুবিধাভোগীদের স্বার্থ দেখছে। সেটাই ‘গুজবের’ অনুকূল পরিবেশ। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :