শিরোনাম
◈ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর ◈ বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ইথানল নিতে পারে, যা তেলের চেয়ে অনেক সস্তা: রাষ্ট্রদূত ◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের  ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা  ◈ হিট স্ট্রোকে রাজধানীতে রিকশা চালকের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ০৬:৫৭ সকাল
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ০৬:৫৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর এগিয়েছে

মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বীর প্রতীক : গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হাঁটি হাঁটি পা পা করে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। ঢাকা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে আমার যাতায়াতের স্থান সীমিত। প্রধান স্থান হলো হাসপাতাল। সকল অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্যই এটা প্রযোজ্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল হচ্ছে ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত কম্বাইন্ড মিলিটারী হসপিটাল। যদি কেউ এই হাসপাতাল দেখতে যান, ভেতরে-বাইরে এর উপস্থাপনা দেখলে আপনারা মোহিত হবেন। যেকোনো উন্নত বিদেশি হাসপাতালের মতো কিন্তু আরও বিস্তৃত ভূখ- নিয়ে। একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল হিসেবে আমি অবশ্যই হাসপাতালকে এবং এই হাসপাতালের উন্নতিতে যারা অবদান রেখেছেন, তাদের অভিনন্দন জানাবো। সেনাবাহিনী বড় হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত জনবলের সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তির সংখ্যা প্রচুর বেড়েছে। সেই তুলনায় জনবল এবং যন্ত্রপাতি বাড়েনি। ভৌত কাঠামো হয়েছে এখন জনবল দরকার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত একটি নাম। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র বা দেশ নিজস্ব স্বকীয়তায় যেমন পৃথিবীর রাষ্ট্রম-লে বা জাতিসংঘে সুপরিচিত, তেমনই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বা বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী নিজ গুণে, নিজ দক্ষতায় নিজ কর্মকা-ের মাধ্যমে অর্ধেক বিশ্বের নিকট সুপরিচিত। জাতিসংঘের অধীনে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শান্তি রক্ষার কার্যক্রমে, বাংলাদেশ অতি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা রেখেই চলেছে গত দুই দশক ধরে। তার সঙ্গে অবশ্যই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নামও উল্লেখ করতে হবে। কারণ পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণও বিদেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে গঠনমূলক প্রশংনীয় ভূমিকা রাখছেন। সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী এবং বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহিলা সদস্যগণের বিশেষ ভূমিকা বিশেষ উল্লেখ ও বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। ব্যক্তি জীবনে আমি নিজে কোনো শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করিনি, কিন্তু রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনের শেষ বছরে যখন এই প্রক্রিয়া স্বীকৃতভাবেই সূচিত হয় তখন আমি, পদাধিকারের কারণে, গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছিলাম।

তখন আমি ছিলাম সেনাবাহিনী সদর দফতরে ডাইরেক্টর অফ মিলিটারী অপারেশনস। ৯১ সালের ফেব্রুয়ারির পরে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সরকার বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর শান্তি রক্ষা কর্মকা-ের গভীর এবং বিস্তৃত পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তার জন্য সকল সরকারকেই অভিনন্দন। বর্তমান সরকারের আমলে এই প্রক্রিয়া অধিকতর স্থিতিশীলতা পেয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতীয় জীবনের একাধিক কর্মকা-ে জড়িত। সবগুলো কর্মক্ষেত্র আলোচনা করার মতো স্থান একটি কলামে হবে না। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল তারিখে সংঘটিত প্রলংয়করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থাপনায় চরম উৎকর্ষতা দেখিয়েছিলো। হাজারের অধিক সদস্যের একটি মার্কিন মেরিন টাস্ক ফোর্স, লেফটেনেন্ট জেনারেল স্ট্যাকপোল-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রায় চার সপ্তাহের অধিককাল সময় অবস্থান করেছিলো। ডাইরেক্টর অফ মিলিটারী অপারেশন্স হিসেবে আনুষ্ঠানিক ইন্টার একশনের বড় সুযোগ ছিলো। মার্কিন বাহিনী আমাদের ভূমিকায় এবং আমাদের কর্মপদ্ধতিতে প্রশংসা করেছিলো। সেই থেকে আজ অবধি মার্কিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর বহু মাত্রার ও আঙ্গিকের সহযোগিতামূলক ও অনুশীলনমূলক কর্মকা- অব্যাহত আছে। কথার কথা বলছি, বাংলাদেশের ক্রিকেট টিম যেমন বাংলাদেশকে সুপরিচিত ও গৌরবান্বিত করেছে, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী বিশেষ করে সেনাবাহিনীও বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে মহিমান্বিত করেছে। ১৯৯১ সালে সৌদি আরবের মাটিতে পবিত্র ভূমি রক্ষার পবিত্র কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। বান্দরবানে দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় একটি সড়ক নির্মিত হয়েছে, যার উচ্চতম স্থান প্রায় তিন হাজার ফুটের কাছে। বাংলাদেশে পর্বতমালা নেই সত্য কিন্তু বাংলাদেশে সুউচ্চ পাহাড়শ্রেণি আছে। বাংলাদেশে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত আছে। নরম মাটির পাহাড়ে অথবা সমুদ্রের বালুকাবেলায় দীর্ঘস্থায়ী সড়ক ও পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অতি প্রশংসনীয় ও দক্ষ ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি আধুনিক সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে ওঠার এবং বিকশিত হওয়ার একটি অধ্যায় পার করছে। চাকরিরত বিভিন্ন র‌্যাংকের সদস্যগণ যেমন এই কর্মযজ্ঞের অংশীদার তেমনই অবসরপ্রাপ্ত সদস্যগণ তাদের শুভাকাক্সক্ষী। ২১ নভেম্বর তারিখে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল সদস্যদেরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশর মিডিয়া সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা জনগণের সামনে আগ্রহের সঙ্গে শুভেচ্ছার ভিত্তিতে উপস্থাপন করে। অবসর জীবনের পর্যবেক্ষণকারী অবস্থান থেকে বাংলাদেশের মিডিয়াকে ধন্যবাদ। সকলকে শুভেচ্ছা। লেখক: চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়