ইরফানুর রহমান রাফিন : ছেলে বাচ্চারা প্রথমে পরিবার, তারপর সমাজ ও সবশেষে রাষ্ট্র থেকে কিছু ভুল শিক্ষা পেয়ে বড় হয় যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ জীবনের জন্য ক্ষতিকর, বিপজ্জনক এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যা তৈরি করে। একটা উদাহরণ : মার্দ কো দার্দ নেহি হোতা। এটা একটা ভয়াবহ ভুল শিক্ষা, পুরুষত্বের সমস্যাজনক সামাজিক নির্মাণের বাইরে, যার কোনো ধরনের কোনো জৈবিক বৈধতা নেই। শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণা যেকোনো মানুষেরই হয়। প্রাপ্তবয়স্করা শিশুদের চেয়ে বেশি যন্ত্রণা সইতে পারে।
কিন্তু সেই সহ্য করারও একটা সীমা আছে। কোনো কারণ নেই পুরুষদের পাথর মনে করার। এই মনে করাটাই বরং পুরুষদের ডিসেন্টিসাইজ করে, কিলিং মেশিন বানায়, তাবৎ কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার বানায়। আরেকটা উদাহরণ : পুরুষ মানুষ কাঁদে না। মেয়ে বাচ্চারা কাঁদলে দেখবেন বাপ-মা খুশি হচ্ছে। ছেলে বাচ্চারা কাঁদলে মুখ কালো করে ফেলছে। অথচ হাসির মতো কান্নাও একটা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। কারও জীবনে কান্নার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে সে কী কারণে কাঁদতে পারবে না? শুধু পুরুষ বলে? এটা কেমন কথা?
সারা দুনিয়ায় পুরুষরা বিপুল হারে আত্মহত্যা করে। মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে। এর জন্য পুরুষত্বের ভুল সামাজিক নির্মাণ দায়ী। পুরুষরা ঠিক ততোটুকুই মানুষ নারীরা যতোটুকু মানুষ। তারা পাথর না। নারীদের মতো তাদেরও আবেগ আছে, অনুভূতি আছে। এই আবেগ অনুভূতিকে বাচ্চাবয়স থেকে জ্যান্ত কবর দিয়ে একটা ছেলেকে হায়ওয়ান বানানো হয়। নারীর প্রতি, শিশুর প্রতি, পশুর প্রতি, পাখির প্রতি, বৃক্ষের প্রতি, নদীর প্রতি, অরণ্যের প্রতি বেরহম বানানো হয়। এই বেরহমিকে পুরুষত্ব বলে চালিয়ে দেয়া হয়। অথচ এই বেরহমি মানুষের জৈবিক সংবেদনশীলতার বিরোধী, যা মানুষ জন্মসূত্রে নিয়ে আসে, যার কারণেই মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। ঈষৎ সংক্ষেপিত। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :