রাশিদ রিয়াজ : ছবি দেখলে সহজেই মনে প্রশ্ন জাগে এটাই কি বিশে^র সবচেয়ে বিপদজনক দ্বীপ। ইতালির সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাতটি দ্বীপ নিয়ে এ দ্বীপাঞ্চল গঠিত। গেল গ্রীষ্মে দুটি বড় ধরনের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। একজনের প্রাণহানি ছাড়াও ৭০জনকে জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নিতে হয়। তার পরও এখনো ৩’শ মানুষ সেখানে বহাল তবিয়তে বাস করছে। আসলে নিসর্গ ঘেরা চমৎকার এক পরিবেশ আর বিশে^র সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেগিরির অগ্নুৎপাত দেখতে বিশে^র বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পর্যটকও দ্বীপটিতে ছুটে আসে। পাগলকরা সৌন্দর্যে ভরপুর এ দ্বীপগুলো মানুষকে চুম্বকের মতই আকর্ষণ করে। বিবিসি
সাদা বালি, নীলাকাশের প্রতিচ্ছবি পড়ে নীল পানি মানুষকে মুগ্ধ করে। এর আড়ালে কিন্তু সেই অগ্ন্যুৎপাতের ভয়াল হাতছানি মানুষকে ডাকে। কিন্তু ৩শ মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছে তারা কিন্তু একটি টাইমস বোমার ওপরই বসে আছে। যেকোনো মূহুর্তে পাহাড় থেকে নেমে আসতে পাড়ে গলিত লাভার ¯্রােত, ঘরবাড়ি, গাড়ি এমন কি মানুষকে চেটেপুটে গিলে খেতে পারে আগ্নেয়গিরির গনগনে লাল জিহ্বা। তারপরও গত ৯০ বছর ধরে ১২ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে যারা বাস করছেন এই দ্বীপে তাদেরই একজন যাজক গিওভান্নি লঙ্গো বলেন, আগ্নেয়গিরির আগে দুই মাইল জুড়ে কালো ধোঁয়ার আকাশ দেখে মনে হয় অগ্নি বৃষ্টি হচ্ছে। গ্যাস, পাথর আর লাভার মিলিত আক্রমণ নরকে পরিণত করে ফেলে নিমিষে এই ভূস্বর্গের মত দ্বীপটিতে।
অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে এই দুর্যোগের সৌন্দর্য দেখতেই ছুটে আছেন পর্যটকরা। পাহাড় থেকে গলিত লাভা অজগরের মত এঁকেবেঁকে সমুদ্রের পানিতে পড়ছে, ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশ এগুলো নৌকায় চেপে বসে দেখতে থাকেন তারা। ক্যামেরায় বন্দী করতে থাকেন মাইলের পর মাইল জুড়ে বিস্তৃত কালো মেঘের ছবি।আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা এই ভয়ংকর সৌন্দর্যের বিস্তৃতি ঘটছে গত ২ হাজার বছর ধরে। যদি আগ্নেগিরি সুপ্ত হয়ে যায় তো পর্যটকরা সৈকতে সাদা বালি মেখে মন উদোম করে নীল আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। বছরে হাজার তিনেক পর্যটক আসে এবং ৩ ঘন্টার এক ভ্রমণে পাহাড়ের চূড়ায় আগ্নেগিরির যতটা কাছে যাওয়া সম্ভব তারা সেখানে সামান্য আঁচেই নিজেদের তাতিয়ে নেন। কখনো আগ্নেয়গিরি দ্রুত ফুঁসে উঠলে জীবন নিয়ে পড়িমরি করে দে ছুঁট। একই কারণে ওই আগ্নেগিরিক ডাকা হয় ভূমধ্যসাগরের বাতিঘর নামে।
আপনার মতামত লিখুন :