শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ০৮:৩৬ সকাল
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ০৮:৩৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টাঙ্গাইলে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ, আসামিদের রক্ষা করার অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

অলক কুমার , টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় প্রভাবশালী মহলের চাপে ইউপি চেয়ারম্যান কলেজছাত্রীকে বানিয়ে দিলেন দেহ ব্যবসায়ী। এমনই ঘটনা ঘটেছে নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামে। ধুবড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানতার পরিষদের প্যাডে কলেজ ছাত্রীকে দেহ ব্যবসায়ী ও তারনিরহ কৃষক বাবাকে মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে এ মাসের ৫ তারিখ প্রতিবেদন দাখিলকরেছেন।

এদিকে এ ঘটনার পর কলেজ ছাত্রী লোকলজ্জার ভয়ে ১২ দিন যাবত বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। বন্ধ হয়ে গেছে তার কলেজে যাওয়া। ধর্ষণের সঠিক বিচার পাবে কিনা সে বিষয় নিয়েও উদ্বিগ্ন পরিবারটি।

জানা যায়, উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের কৃষকের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে...(১৭) কে প্রায়ই উত্যক্ত তোসারুটিয়া গাজি গ্রামের জয়ধর শেখের ছেলে জুয়েল রানা। বিয়ের প্রস্তাবও দেয় কিন্তু ছেলের স্বভাব চরিত্র ভালোনা থাকার কারনে মেয়ের বাবা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে লম্পট জুয়েল রানা। জুয়েল রানা ১২ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতি বার সন্ধ্যায় ধুবরিয়া বাচ্চু মিয়ার বীজের সামনে থেকে বন্ধুদের সহযোগীতা নিয়ে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে।

জুয়েল রানাক লেজছাত্রী কেতার আত্মীয় বাড়িতে তিনদিন আটকে রাখে। ঐ ছাত্রী কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে তার বাবা মা’কে ঘটনাটি জানায়। পরে ধুবড়িয়া গ্রামের মাতাব্বদের ধর্ষণের বিষয়টি অবগত করেন। এ নিয়ে ঐ গ্রামের লোকজ নের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রভাবশালী মাতাব্বররা বিভিন্ন সময়ে টাল বাহানা ও সময়ক্ষেপন করে আসেন।

ফলে ঐ ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে বিজ্ঞ নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল টাঙ্গাইল আদালতে ৫জন কে আসামি করে নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

আসামিরা হলেন সারুটিয়া গাজি গ্রামের জয়ধর শেখের ছেলে মো. জুয়েল রানা (২২),ধুবড়িয়া গ্রামের হায়েদ আলীর ছেলে মো. শিপন (২৬), মো. রিপন (২৩), উফাজ (৪২) ও একই গ্রামের মো. বাবুল মিয়ার ছেলে মো. রিয়াজ মিয়া (২১)।

পরে মামলা তুলে নেয়ারজন্য তারা বাদীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকী দিয়েআসছে। মামলার তদন্ত রিপোর্ট সিআইডি দাখিলের পর আসামিরা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে। আসামিরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।

আসামি রাধু বড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ম্যানেজকরে ধর্ষণের বিষয়টিকে ধামা চাপা দিয়ে উল্টা ঐ ভিকটিমকে দেহ ব্যবসায়ীও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আসামিদের পক্ষে একটি প্রতিবেদন দেয়।

সিআইডি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এ মামলার কলেজ ছাত্রীর বাবা এক জন হত দরিদ্র কৃষক। তিনি দিন মজুরের কাজ করেন এবং এক প্রবাসীর বাড়িতে স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান নিয়ে দূর্বিষহ ভাবে বসবাস করে আসছেন। ঐ কৃষকের কন্যা ২০১৮ সালে ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় হতেএসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েমানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরে এক কলেজে লেখাপড়া করে আসছে। ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ঐ ছাত্রীর সঙ্গে জুয়েল রানার পরিচয় হয়। জুয়েল এ ছাত্রীকে ভালোবাসার প্রস্তাব দিলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে জুয়েল রানা এ ঘটনাটি ঘটায়। সিআইডি’র তদন্ত কর্মকর্তারা ঐ কৃষকের পরিবারের বিরুদ্ধে মাদক ও দেহ ব্যবসার কোনো অভিযোগ পাননি।

এ বিষয়ে কলেজ ছাত্রীর বাবা জানান, চেয়ারম্যান আমার পরিবারকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন। যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে গ্রাম থেকে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি।

এ ব্যাপারে ধুবড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান আমি দিতে পারি তাই দিয়েছি। ছাত্রীর বিরুদ্ধে মাদক ও দেহ ব্যবসার ক্ষেত্রে কোন মামলা আছে কিনা আমি জানি না। এলাকার লোকজন বলেছে তাই আমি এ প্রতিবেদন দিয়েছি।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমচাঁদ জানান, চেয়ারম্যান কলেজ ছাত্রীর বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা সঠিক নয়। এ পরিবারের নামে মাদক ও দেহ ব্যবসার বিষয়ে এলাকায় ও থানায় কোন অভিযোগ নেই। এ মামলার আসামিরা মেয়ের পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকী প্রদান করে আসছে। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা রয়েছে এবং আসামিরা পলাতক আছে। মেয়েটির পরিবারের নিরাপত্তার প্রতি বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট এস আকবর খানবলেন, আদালত কর্তৃক কাউকে দোষী না করা পর্যন্ত কোন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা তো দূরের কথামাদক ও দেহ ব্যবসায়ী বলে কাউকে আক্রান্ত করারএখতিয়ার কারও নেই। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। সম্পাদনা: জেরিন মাশফিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়