শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ দুপুর
আপডেট : ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নতুন মুখের চমক আসছে যুবলীগের নেতৃত্বে

জনকণ্ঠ :  দেশের বৃহৎ যুব সংগঠন যুবলীগে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ বুড়োদের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে অনেক আগেই। পাশাপাশি বাদ যাচ্ছেন বয়সের ফাঁদে পরা সংগঠনের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতাই। প্রবীণদের বিদায় নিশ্চিতের পর অপেক্ষাকৃত একঝাঁক তরুণদের নিয়ে নেতৃত্ব সৃষ্টির নতুন মেরুকরণ শুরু করেছে সংগঠনটি।  ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ধারাবাহিক সম্মেলনে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে নতুন সম্মেলন মানেই নতুন মুখ। কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগসহ, সর্বশেষ স্বেচ্ছাসেবক লীগে নতুন নেতৃত্ব এনেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই তিনটি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে স্থান পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও বিগত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতারাই। তবে যুবলীগের ক্ষেত্রে সভাপতি পদে ওই সংগঠন থেকে নাকি বাইরে থেকে কাউকে আনা হচ্ছে- এ নিয়ে সর্বত্রই চলছে জোর গুঞ্জন।

আগামী ২৩ নভেম্বর যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে তরুণ, যুববান্ধব ও সৎ নেতৃত্ব গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। যুবলীগের সু-দীর্ঘ গৌরব ও ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি এর কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।  এবারের সম্মেলনে বড় চমক হিসেবে থাকাবে নতুন কমিটিতে তরুণ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব।  পাশাপাশি সহজেই ঠাঁই মিলবে না কোন দুষ্কর্মকারীর। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্য থেকেই বেছে নেয়া হতে পারে সংগঠনের নতুন কমিটি।

৫৫ বছরের উর্ধে কেউ যুবলীগের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না বলে ইতোমধ্যে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বয়সের ফাঁদে পড়ে স্থায়ী ঠিকানা হারানোর দুশ্চিন্তায় দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন বুড়িয়ে যাওয়া নেতারা। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে বয়সসীমা বেঁধে দেয়ায় সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে যারা কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না, বয়সসীমা নির্ধারণের পর তারা আলোচনার পুরোভাগে চলে এসেছেন। যাদের বেশিরভাগ সৎ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, ত্যাগী ও পরীক্ষিত।

সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব খুঁজছেন। যারা সংগঠনের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন, দলে পরীক্ষিত, ত্যাগী, ক্লিন ইমেজ ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এমন অনেক নেতার প্রোফাইল এখন সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার হাতে। দলীয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যুবলীগের ইমেজ ফিরিয়ে আনতে এসব নেতার বিষয়ে অনুসন্ধান এবং সাংগঠনিক দক্ষতার বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন তিনি। এর মধ্যে থেকে বাছাই করে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ও সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন দু’জনকে যুবলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হবে। একইসঙ্গে যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণেরও নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে দ্রুত গতিতে।

আগামী ২৩ নবেম্বর শনিবার সকাল এগারোটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কংগ্রেসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশনেই যুবলীগ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেবেন ৫৫ বছরের বেশি বয়সী সব নেতা। ইতোমধ্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়ে চয়ন ইসলামকে আহ্বায়ক করে কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদকে সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হলেও বয়সসীমার কারণে নতুন কমিটিতে তিনিও বাদ পড়ছেন।

এদিকে, যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেস সামনে রেখে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছেন পদ-পদবি প্রত্যাশী নেতারা। তারা চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রেক্ষাপটে নিজেদের পরিচ্ছন্ন ইমেজ তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। কংগ্রেসের মাধ্যমে ইতোমধ্যে যুবলীগের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। দুর্নীতি ও নানা অপকর্মে জড়িত বিতর্কিতরা নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়বেন। সৎ, দক্ষ, পরীক্ষিত ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতারা প্রাধান্য পাচ্ছেন নতুন নেতৃত্ব গঠনে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, যুবলীগের ৩৫১ সদস্যের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিতে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া সবার বয়স ৫৫ বছর পেরিয়েছে। কারও কারও বয়স সত্তরের কোঠা ছাড়িয়েছে। সর্বোচ্চ পাঁচ নেতাও খুঁজে পাওয়া যাবে না, জাতীয় যুবনীতি অনুযায়ী যাদের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকসহ প্রেসিডিয়ামের ২৭ নেতার বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ বছর পেরিয়ে গেছে। ’৭২ সালের ১১ নবেম্বর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তারুণ্যনির্ভর যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যুব নেতা শেখ ফজলুল হক মনি। সে সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ৩২ বছর। যুবলীগের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে অনুমোদিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৩৫ বছরের বেশি কারও যুবলীগের সদস্য হওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। এরপর আর বয়সসীমা অনুসরণ করা হয়নি। এবার নতুন করে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের মধ্যে শেখ ফজলুল হক মনি, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। অব্যাহতিপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীও বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মীয়। এসব কারণে কংগ্রেস সামনে রেখে যুবলীগ চেয়ারম্যান পদে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কোন সদস্য আসছে কি না, সেই আলোচনা সর্বত্র। এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ও ঢাকা-১০ আসনের এমপি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন করার খবর প্রকাশ হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য তা আর হয়নি। চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় রয়েছেন শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশের নামও। তবে চেয়ারম্যান পদে বাইরে থেকে নাকি যুবলীগের মধ্যে থেকেই কাউকে বেছে নেয়া হবে, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের ওপর।

অনুলিখন: সৌরভ আরাফাত , সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব

 

 

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়