সাইফুর রহমান : ভারতের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) আসলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করার এবং মুলমানদের রাষ্ট্রহীন করে তোলার একটি হাতিয়ার, এমন অভিযোগ করেছে ‘আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা’ সম্পর্কিত একটি ফেডারেল মার্কিন কমিশন।সরকারের প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকা থেকে ইতোমধ্যেই ১৯ লাখ নাগরিককে বাদ দেয়া হয়েছে।এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে শুক্রবার ‘ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস’ ফ্রিডম জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি দেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে এটি স্পষ্টতই বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে এবং মুসলিমদের রাষ্ট্রহীন করে করে তুলতে একটি সুপরিকল্পিত কর্মসূচি। এনডিটিভি, হেরাল্ড পাবলিসিস্ট
শুক্রবার প্রকাশিত কমিশনের এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভারতের অভ্যন্তরে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিম্নমুখী প্রবণতার এ এক বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।নীতি বিশ্লেষক হ্যারিসন আকিনসের তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে ইউএসসিআইআরএফ অভিযোগ করেছে, ২০১৯ সালের আগস্টে এনআরসি তালিকা প্রকাশের পরেই বিজেপি সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যা মুসলিম বিরোধী পক্ষপাতিত্বের স্বাক্ষর বহন করে। প্রতিবেদনে অঅরো বলা হয়, বিজেপি ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য একটি ধর্মীয় পরীক্ষা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে যাতে হিন্দু এবং কিছু ধর্মীয় সংখ্যালঘু বেঁচে যাবে ঠিকই, তবে বাদ পড়বেন মুসলমানরা।
এদিকে এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, এটি একটি বৈষম্যহীন প্রক্রিয়া, যেখানে পক্ষপাতিত্ব এবং অন্যায়ের কোনো অবকাশ নেই। কারণ এনআরসিতে তথ্য জানানোর আবেদন ফর্মেই দেখা যায় যে, আবেদনকারীদের ধর্ম সম্পর্কে কোথাও জানতে চাওয়া হয় নি। তালিকা থেকে বাদ পড়া যে কারো বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার অধিকার রয়েছে।
২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশের পর আসামের এই নাগরিকপঞ্জি হালনাগাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। যেখানে রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে তারা ভারতীয় এবং ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকেই ভারতে বসবাস করছেন। সর্বশেষ ৩১ আগস্ট আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :