কালের কন্ঠ: তৃণমূলের পাশাপাশি দলের বেশির ভাগ জ্যেষ্ঠ নেতারা এর সঙ্গে একমত বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র। আর এই সঙ্গ ত্যাগ করতে হলে সম্মতি লাগবে বিএনপির ভাইস চেয়াম্যান তারেক রহমানের। দলীয় নেতাদের বড় অংশই এখন চাইছেন, জামায়াত জোট ছেড়ে চলে যাক।
বিএনপির ঢাকায় থাকা নেতারা মনে করেন, তারা সবাই মিলে চাইলেও জামায়াতের সঙ্গে জোট ভাঙা যাবে না। এ জন্য দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়া এবং লন্ডনে থাকা তারেক রহমানের সম্মতি লাগবে। ওই সম্মতি আদায় করা সম্ভব বলেও তারা মনে করেন। তাদের মতে, দলে তারেক রহমান জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত নন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সুধীসমাজের বিএনপিপন্থী দু-একজন প্রতিনিধি ছাড়াও নানা মাধ্যমে দলের নেতারা তারেকের কাছে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন যে বিদ্যমান বাস্তবতায় দক্ষিণপন্থী দল জামায়াতকে নিয়ে আর সামনে এগোনো সম্ভব নয়। পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে জামায়াত নিয়ে কোন কূটনীতিক কী মনোভাব ব্যক্ত করেন তাও তারা তারেক রহমানকে জানানোর চেষ্টা করছেন।
সূত্র মতে, গত ৬ নভেম্বর বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে জামায়াত প্রসঙ্গে নতুন করে কথা তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস। বারিধারায় মার্কিন দূতাবাসে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে অ্যালিস ওয়েলস বলেন, ব্যাপক জনসমর্থন থাকায় বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী। কিন্তু জামায়াত সঙ্গে থাকলে তাদের জন্য কিছু করা বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় দলটির জন্য কঠিন হবে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেলেও সেদিনের বৈঠকে উপস্থিত কোনো নেতা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ওই বৈঠকে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। এর আগে ২৮ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপির প্রায় ২০ বছরের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতকে নিয়ে দলে নতুন করে আলোচনা হয়নি। তাই ২০ দলীয় জোট এখনো টিকে আছে। তবে ভবিষ্যতে কী হবে সেটি সময় বলে দেবে।’
১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন করেছিল বিএনপি। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে ওই জোট ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর বৈশ্বিক রাজনীতিতে এক নতুন অবস্থার উদ্ভব হয়।
অনুলিখন : তন্নীমা আক্তার, সম্পাদনা : ইয়াসিন আরাফাত
আপনার মতামত লিখুন :