মাসুদ রানার ফেসবুক থেকে: বর্তমান বিশ্ব-পরিস্থিতি এমনই যে, প্রতিটি জাতির মধ্যে নতুন করে জাতীয় আত্মসচেতনতার উন্মেষ ও বিকাশ ঘটছে। এটি হচ্ছে সম্ভাব্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বগামী মনোরাজনৈতিক ক্ষেত্রপ্রস্তুতির অংশ।
সাধারণভাবে, বিশ্বব্যাপী বামপন্থীরা জাতীয়তাবাদকে রূপতঃ পাপ মনে করার কারণে, তাদের পক্ষে গণ-মানুষের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে ধারণ করা কিংবা এ্যাড্রেস করা সম্ভব নয়। একইভাবে, ব্রিটিশ লেইবার পার্টির বর্তমান নেতৃত্ব সমাজাতান্ত্রিক হওয়ার কারণে তাদের পক্ষে ইংলিশ জনগোষ্ঠীর জাতীয় অনুভূতির মর্ম উপলব্ধি করে তার প্রতি সঠিক ক্রিয়া করা সম্ভব হচ্ছে না।
যদিও লেইবার পার্টি ক্ষমতায় এলে তা শুধু ব্রিটিশ জনগণের জন্যেই নয়, সারা বিশ্বের জন্যে ইতিবাচক হবে, কিন্তু জাতীয় চেতনায় উত্থিত ইংলিশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারা ইতিবাচক সাড়া জাগাতে পারছে না।
ইংলিশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইতিবাচক সাড়া জাগাতে হলে লেইবার পার্টিকে ভূমি-কাঁপানো সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে, যার ফলে জাতীয় চেতনাকে পেছনে ফেলে তীব্র শ্রেণী চেতনা জেগে ওঠে সাধারণ শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের মধ্যে।
গত তিন-চার দশকে যে-সকল পরিষেবা ব্যক্তি-মালিকানায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে, লেইবার পার্টিকে সেগুলোর পুনঃজাতীয়করণ করে জনগণের কাছে সেগুলো সম্ভব হলে বিনামূল্যে বা অল্পমূল্যে সুলভ করতে হবে। তাদেরকে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বাসস্থান, বেতন-ভাতা, গণ-পরিবহন, বিনোদন, অবসর, তথ্য ও সংযোগাযোগ-সহ সকল ক্ষেত্রে কোর্পোরেইট মুনাফামুখিতার পরিবর্তে জনকল্যাণমুখিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে, লেইবার পার্টিকে জাতীয় জীবনের পাশাপশি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা-সহ ব্রিটেইনের ইতিবাচক বিশ্বভূমিকা স্পষ্ট করে তুলতে হবে। বিশেষতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জুনিয়র পার্টনার না হয়ে ব্রিটেইন কীভাবে তার অগ্রনী ও ইতিবাচক স্বতন্ত্র বিশ্ব-ভূমিকা পালন করতে পারে, সেটি ব্রিটিশ জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।
কাজগুলো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। আর, এটি শুধু ব্রিটিশ লেইবার পার্টির বিজয়কেই সুনিশ্চিত করবে না, এতে বিশ্বের রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে।
১৪/১১/২০১৯
লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড
আপনার মতামত লিখুন :