কামরুল হাসান মামুন : ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬ জন প্রাণ হারালো আর অনেকের জীবন বাঁচলেও স্বজন হারিয়ে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যেখান থেকে দুর্ঘটনার আগের জীবনে ফিরে যাওয়া আর কোনোদিন সম্ভব নয়। পৃথিবীর অন্য যেকোনো সভ্য দেশে এ রকম ঘটনা ঘটলে রেলের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী তার পদ থেকে পদত্যাগ করতেন অথবা তাকে বরখাস্ত করা হতো।
অনেকেই ভাবতে পারেন মন্ত্রী কি ট্রেন চালাতেন? দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের দেশে এ রকম চিন্তা করার মানুষের সংখ্যা বেশি বলেই আমাদের মন্ত্রীরা এ রকম। মন্ত্রীর পদত্যাগ করা মানে ভবিষ্যতে যেই মন্ত্রী হবে সে অনেক সচেতন থাকবে। সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তির সর্বোচ্চ সচেতনতা মানে ওই মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন তারা সবাই সচেতন থাকবে। এটা অনেকটা সচেতনতার স্ট্যান্ডিং ওয়েভের মতো যেটা গোটা মন্ত্রণালয়জুড়ে থাকবে। রেল মন্ত্রণালয় আজ অনেক বছর যাবৎ লোকসান দিয়ে আসছে। কিন্তু রেলপথে যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে গেলে টিকিট পাওয়া যায় না। অর্থাৎ টিকিট সব বিক্রি হয়, কিন্তু লাভ হয় না। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বলতে শুনলাম রেল নাকি মুনাফা করার জন্য নয়।
নিজের অযোগ্যতাকে জাস্টিফাই করার কি নগ্ন চেষ্টা।আমাদের দেশটাই হলো এমন যেখানে কর্তাব্যক্তিরা যতোই অযোগ্য হোক যতোই ব্যর্থ হোক চেয়ারে কামড় দিয়ে হলেও চেয়ারে থাকবে। এর একটি বড় কারণ হলো এই সভ্য আচরণ যেখান থেকে শেখার কথা সেখানেই তো নেই। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় সব ভিসিই অযোগ্য। এই অযোগ্যদের ব্যর্থতা যখন চক্ষুষ্মান হয় তখন ছাত্রছাত্রীরা ভিসির পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলনে নামে। তার নামে নানা গালিগালাজ দিয়ে স্লোগান হয়। দুর্নীতি শুধু নয়, যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগও উঠে। তারপরও তারা পদত্যাগ করতে চায় না।
সরকারও তাদের বরখাস্ত করতে চায় না কারণ এতে তাদের সম্মানে লাগে। কিন্তু এর মাধ্যমে আমরা সিস্টেমকে নষ্ট করে ফেলছি সেইদিকে আমাদের নজর নেই। প্রত্যেক ভিসিই প্রথমে তিনি শিক্ষক। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেই ধরনের অভিযোগ আনা হয় সেইসব অভিযোগে কেবল ভিসি পদ না বরং তার শিক্ষকতার পদও হারানোর কথা। হ্যাঁ, কথা। যদি দেশটি স্বাভাবিক দেশ হতো। একটি সুস্থ স্বাভাবিক দেশ পেতে হলে প্রথমে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুস্থ স্বাভাবিক বানাতে হবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :